ডলারের দামবৃদ্ধি ও রিজার্ভ হ্রাস একটি বৈশ্বিক প্রবণতা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির সূচকগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া একটি সাধারণ প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। কেবল ডলারের বিপরীতে টাকার মান যে কমেছে এমন নয়-পাউন্ড, ইউরো, ইয়েন, ইউয়ান ও সুইস ফ্রাঁর মতো বহুলপ্রচলিত ও শক্তিশালী মুদ্র্রার মানও কমে গেছে। গত ২০ বছরের মধ্যে ডলারের মান এখনই সবচেয়ে বেশি। দি ইউএস ডলার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের মান কমেছে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ব্রিটিশ পাউন্ড ও ইউরোর দাম কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে, সুইস ফ্রাঁর মান কমেছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ আর চীনের মুদ্রা ইউয়ানের অবমূল্যায়ন ঘটেছে সাড়ে ৩ শতাংশ।
এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষেত্রেও একই চিত্র লক্ষণীয়। জুলাইয়ে ভারতের বৈদেশিক মুদ্র্রার রিজার্ভ ৫৯৬ থেকে কমে ৫৭২ বিলিয়নে নেমে এসেছে, যা গত বিশ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। জুনে তুরস্কের রিজার্ভ কমে গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে আসে। জুনে ডলারের বিপরীতে পেসোর (ফিলিপাইনের মুদ্রা) দাম কমে যাওয়ায় ফিলিপাইনের রিজার্ভ কমে ১০১ বিলিয়িনে নেমে আসে, যা গত ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। চীন ও জাপানের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশেরও রিজার্ভ কমেছে।
এ অবস্থায় খুঁজে বের করার দরকার কেন ডলারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে। বৈশ্বিক অতিমারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি, বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা, মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন এবং ডলারের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম থাকায় বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং ডলারের দামে পরিবর্তন এসেছে। এর কয়েকটি কারণ দেখানো যায়। প্রথমত, আপাতদৃষ্টিতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসাবে মূল্যস্ফীতি ও চাহিদা-জোগানের পরিবর্তনকে বিবেচনা করলেও এর শুরুটা বৈশ্বিক অতিমারি থেকে।