সংলাপের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ প্রায় শেষ। আজ রোববার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এই পর্ব শেষ হবে। এর পরই সবার দেওয়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে হিসাব-নিকাশ করবে ইসি। ১৭ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংলাপে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক প্রস্তাব দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। ইসি বলছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে দলগুলোর দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে খুব শিগগির পর্যালোচনায় বসবে সংস্থাটি। গত ১৩ দিনে ইসির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দলই নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি তুলেছে। এসব আলোচনার মধ্যে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টিও এসেছে বারবার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসির সংলাপে দলগুলো প্রস্তাব না দিলেও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসি তাদের পদক্ষেপ নেবে। তবে তারা এও বলছে, শত শত প্রস্তাব পেলেও ইসি তাদের এখতিয়ারবহির্ভূত কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারবে না।
১৭ জুলাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে ইসি। সংলাপে অংশ নিয়েছে ২৬টি দল। প্রথম দিনই ইসির প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে সংলাপের ডাকে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ সমমনা আরও আটটি দল ইসির সংলাপ বর্জন করেছে। দলগুলোর নেতারা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে তাঁরা কোনো নির্বাচনে যাবেন না। আর তাই এই ইসির সঙ্গে কোনো সংলাপেও বসতে চান না তাঁরা।
তবে সংলাপে কে এল, কে এল না, তা নির্বাচন আয়োজনে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলেই মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন। তিনি বলেন, অংশ নেওয়া দলগুলোর প্রস্তাব কোনোটি গ্রহণযোগ্য হবে আবার কোনোটি নাও হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘শত শত সুপারিশ আসবে সংলাপে। এর মধ্যে কিছু গ্রহণযোগ্য হবে, কিছু হবে না। ইসির এখতিয়ারের মধ্যে যেসব প্রস্তাব থাকবে, তা বাছাই করবে। নির্বাচনের পথে যা যা করণীয় তা করে যাবে ইসি।’
দলগুলোর পক্ষ থেকে পাওয়া নির্বাচনকালীন সরকার প্রস্তাবের বিষয়ে ছহুল হোসাইন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বিদ্যমান সংবিধান, আইন-বিধি মেনেই কাজ করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। সংবিধান সংশোধনের মতো জটিলতার মধ্যে কমিশনের কিছু করার নেই।’
ইসির সংলাপ বর্জন ও বিভিন্ন দলের প্রস্তাবের বিষয়ে কথা বলেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। তাঁর মতে, সংলাপ বর্জন কিংবা নির্বাচন বর্জনে ইসির করণীয় কিছু থাকে না। সে সঙ্গে রাজনৈতিক দাবি থাকলেও ইসি এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারে না।
চলতি সংলাপে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, সংলাপ শেষে দলগুলোর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে, দলের প্রধানের কাছে সারসংক্ষেপ কমিশন পাঠিয়ে দেবে। নির্বাচনকালীন সরকার এ সরকারই করতে পারবে। তিনি বলেন, ‘সংবিধানে আমাদের যে ক্যাবিনেট ফরমেশনটা রয়েছে; মেসেজগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেব।’