চামড়া শিল্পনগরে দূষণ: সংসদীয় কমিটির 'পদক্ষেপ' কাজে আসছে?
অনেক চেষ্টায় ঢাকার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানো হয় যে কারণে, সেই দূষণই বন্ধ হয়নি সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরীতে; যা নিয়ে কঠোর হতে একাধিক পদক্ষেপের পরামর্শ এসেছে সংসদীয় কমিটির কাছ থেকে।
এ বিষয়ে সোচ্চার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বারবার ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছে। তবে প্রায় এক বছরেও সেগুলোর কোনটারই বাস্তবায়ন হয়নি।
বারবার সুপারিশের পরও কাজ কেন হচ্ছে না- জানতে চাইলে এই কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “শিল্প মন্ত্রণালয় আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানো ও ক্রোমিয়াম কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
“আমরা বলেছি, ব্যর্থ হলে এর জন্য দায়ী ইউনিটগুলো চালু রাখতে দেব না। দরকার হলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
হেমায়েতপুরে শিল্প নগরীতে কোরবানির ঈদের সময় ট্যানারির চামড়ার উচ্ছিষ্ট ভাগারে ফেলা হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
দূষণ না কমায় সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট ট্যানারির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধের এমন সুপারিশ এসেছে কমিটির কাছ থেকে। এতে প্রশ্ন উঠেছে, সংসদীয় কমিটি নিজেদের শক্ত অবস্থান থেকে কি সরে দাঁড়াল?
কেননা দূষণের বিষয়ে ছাড় না দিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন চামড়া শিল্পনগরী ‘আপাতত বন্ধ’, ‘বন্ধে অভিযান’ পরিচালনার মত কঠোর পদক্ষেপের সুপারিশ করলেও এবার পুরো নগরীর বদলে দায়ী ট্যানারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলছে কমিটি।
যদিও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বলছে, তারা এখনও ‘কঠোর অবস্থানে’ আছে। তারা মনে করছে, সরকারের আরেকটি মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ‘বিব্রত বোধ’ করছে।
এদিকে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, তারা বিষয়টি নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ‘বারবার’ আলোচনা করছে।
আর শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে এজন্য কাজ চলছে, বিভিন্ন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।
সংসদীয় কমিটি আগের সুপারিশ থেকে পিছিয়ে এসেছে কি না- এমন প্রশ্নে সাবের হোসেন বলেন, “আমরা এখনও কঠোর অবস্থানে। তবে আমরা মন্ত্রণালয়ের পজিশন কিছুটা বুঝি, আরেকটা মন্ত্রণালয়কে বলতে হয়ত তারা বিব্রত।
“আমাদের অবস্থান ও আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবস্থা হবে, আর সরকার বলে ব্যবস্থা নেব না, সেটাতো হয় না।“
শিল্প, কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের মত অনেক যুক্তি দেখায় শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু আমরা তো জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যও গুরুত্বপূর্ণ।”