বেশির ভাগ প্রস্তাব ইসির এখতিয়ারের বাইরে

কালের কণ্ঠ নির্বাচন কমিশন কার্যালয় প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২২, ০৮:৩৪

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ আজ রবিবার শেষ হওয়ার কথা। আজ শেষ দিনে অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।


এ ছাড়া দুটি দল এর আগে নির্ধারিত সময়ে সংলাপে অংশ না নিয়ে পরে সময় চেয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন দল দুটিকে এখনো সময় দেয়নি।


সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, দল দুটিকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে সময় দেওয়া হতে পারে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ বিষয়ে গতকাল শনিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই দুটি দলকে সময় দেওয়ার বিষয়ে কমিশন এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।


এদিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৭ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ইসির সঙ্গে সংলাপে যে ২৬টি দল অংশ নিয়েছে, তাদের মধ্যে সরকারি দলের বিপক্ষের অনেকেরই অনেক প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নে কমিশনের কিছুই করার নেই। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধান ও নির্বাচনী আইন সংশোধন এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।


এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনের তফসিলের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া, ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও জনসমর্থনহীন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করা। আবার এর বিপরীতে ছিল ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলগুলোর নিবন্ধন না দেওয়া, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া। নির্বাচনের সময় সিইসির ‘সুপার প্রাইম মিনিস্টারের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া, বর্তমান রাজনৈতিক সরকারের পরিবর্তে তদারকি সরকার, জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার বা জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নিয়োগ করা।


কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘এটা বাস্তবায়ন করলেও আমরা নিতে পারব তা মনে হয় না। ’


গত ২৫ জুলাই তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সংলাপে বলেন, ‘আমাদের যতটুকু ক্ষমতা আইনে দেওয়া হয়েছে, আমরা তা প্রয়োগের চেষ্টা করব। অনেক প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবও পেয়েছি। আমাদের ম্যান্ডেন্ট কিন্তু লিমিটেড। ’


ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কয়েকজন জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের সংলাপে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়ে কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে প্রায় অভিন্ন প্রস্তাব রাখে এবং তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া ওই নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত অনেক প্রস্তাবও লিখে রাখা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি নুরুল হুদা কমিশন।


এ সম্পর্কে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা আমাদের সঙ্গে সংলাপে আসা প্রস্তাবগুলো পুস্তকাকারে সরকারের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছিলাম। এর বেশি কিছু করার ছিল না। কারণ সংবিধানে যে ক্ষমতা আমাদের দেওয়া আছে তার বাইরে আমরা তো কিছু করতে পারি না। ’ এবারের সংলাপ নিয়ে আপনার মতামত কী—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিয়ে তো অনেক অভিযোগ আছে। আমরা গণতন্ত্র, নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছি—এসব বলা হয়। বর্তমান কমিশন হয়তো নতুন কিছু করবে। ’


কমিশনের এখতিয়ারবহির্ভূত প্রস্তাবগুলোর সম্পর্কে কী ব্যবস্থা নেবেন—এ প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সংলাপ শেষ হওয়ার পর কমিশনের সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে প্রস্তাবগুলো পেয়েছি তার মধ্যে কোনগুলোর বাস্তবায়ন আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে, আর কোনগুলো পড়ে না, তা পর্যালোচনা করে কতটুকু নিতে পারব, আর কতটুকু নিতে পারব না, সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’


আরেক সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এবং নির্বাচন কমিশনের জন্য যে আইন আছে, তা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট। এসব আইন সংশোধনের, সংযোজনের আর কোনো প্রয়োজন নেই। সংলাপেরও প্রয়োজন নেই। সমস্যা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনারদের সংখ্যা। সিইসিসহ মোট পাঁচজন নির্বাচন কমিশনার থাকার কারণে দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও