কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

লোডশেডিং কার্যকর সমাধান নয়

সমকাল সবুজ ইউনুস প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২২, ০৯:২৬

বিদ্যুৎ ছাড়া আধুনিক জীবন অচল। কিন্তু বিদ্যুৎ এমনই একটি পণ্য, যা মজুত করা যায় না। যখন যতটুকু উৎপাদন হয়, তখনই ততটুকু ব্যবহূত হয়। আবার জ্বালানি ছাড়া এই 'মহাশক্তিশালী' পণ্যটি উৎপাদন করা যায় না। এটি উৎপাদনে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহূত হয় ডিজেল, ফার্নেস, গ্যাস, কয়লা, পানি, বাতাস, সূর্যের আলো ইত্যাদি। গ্রিন এনার্জির কথা বলে যদিও পরিবেশবাদীদের মুখ ব্যথা হয়ে গেছে; এখনও ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়েই বিশ্বের ৮০ শতাংশ শক্তি বা বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।


এদিকে জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লার মূল্য আকাশচুম্বী। কারণ করোনার তেজ কমতে না কমতেই অনেকটা আকস্মিকভাবে শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যে যুদ্ধ বিশ্বের সব হিসাবনিকাশ পাল্টে দিচ্ছে। মূল্যস্ম্ফীতি যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে নতুন নতুন রেকর্ড করছে। বৈশ্বিক এই সংকটে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা সর্বাধিক ঝুঁকির মুখে। বিশ্বের প্রায় সব দেশ বুঝে ফেলেছে, ব্যয় সংকোচন ছাড়া উপায় নেই। সাশ্রয়ী না হলে বিপদ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বাংলাদেশও সাশ্রয়ের পথে হাঁটছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর একটি হলো 'পরিকল্পিত লোডশেডিং'।


মনে রাখতে হবে, পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের মূলে রয়েছে জ্বালানি সাশ্রয়ের চিন্তা। প্রশ্ন হচ্ছে 'সাশ্রয়' করব কোথায়? আমরা জানি, দেশের মোট চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ গ্যাস আমদানি করতে হয়। ওই ২০ শতাংশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত স্বাভাবিক মূল্যে আমরা ১৫ শতাংশ গ্যাস ওমান ও কাতার থেকে আমদানি করে থাকি। বাকি যে ৫ শতাংশ গ্যাস; এটা খোলাবাজার থেকে অতিরিক্ত দামে আমদানি করতে হচ্ছিল। এখন সেটা বন্ধ। অর্থাৎ ৯৫ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ আগের মতোই স্বাভাবিক। এই ৫ শতাংশ গ্যাস ঘাটতির কারণে ইতোমধ্যে দুটো সার কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাফকো সার কারখানায় গ্যাস বন্ধের সুযোগ নেই। কারণ চুক্তি অনুযায়ী এখানে গ্যাস সরবরাহ করতে সরকার বাধ্য। এ ছাড়া যা-ই হোক, কৃষি উৎপাদন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। কারণ এই সংকটকালে কৃষিই আমাদের সবচেয়ে বড় অবলম্বন হতে পারে। ওদিকে রপ্তানিমুখী শিল্পেও উৎপাদন সচল রাখতে হবে। এ জন্য বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে হবে রপ্তানিমুখী শিল্পে। এটাও মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক অঞ্চলের সীমানা সুনির্দিষ্ট নয়। ফলে খাতভিত্তিক লোডশেডিং সম্ভব নয়। তার মানে, পরিকল্পিত লোডশেডিং করতে গিয়ে সার ও পোশাক কারখানার মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাতের উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে।


বস্তুত বিদ্যুতের উৎপাদন কমিয়ে লোডশেডিং করে প্রকৃতপক্ষে কোনো খাতেই লাভ হচ্ছে বলে মনে হয় না। বরং এতে ডিজেল-কেরোসিনের অপচয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ বাসাবাড়ি বা দোকানপাটে যখনই বিদ্যুৎ চলে যায়, তখনই ডিজেল জেনারেটর চালু করা হয়। বিদ্যুৎবিহীন ১ মিনিটও কেউ থাকতে চান না। ফলে যে ডিজেল সাশ্রয় করার জন্য ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হলো; তাতে কতটুকু লাভ হলো, তা নিয়ে সংশয় আছে।


লোডশেডিংয়ের শিডিউল ছাড়াই বিভিন্ন এলাকায় বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়া অব্যাহত থাকলে খুচরা ডিজেল বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে। পাড়া-মহল্লায় ডিজেল সংকটের কারণে নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা আছে। আমাদের বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন, ট্রান্সফর্মার বহু স্থানে এখনও পুরোনো। লাইন ওভারলোডেড হয়েও বহু স্থানে শিডিউলের বাইরে কয়েকবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। এটা ঘাটতিজনিত কোনো লোডশেডিং নয়; বিভ্রাট। যে কারণে আগাম শিডিউল জানিয়ে দিয়ে সেই মোতাবেক লোডশেডিং করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে গ্রাহকরাও বিরক্ত হচ্ছে। কারণ লোডশেডিংয়ের অভ্যাস থেকে জনগণ এক প্রকার বের হয়ে এসেছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও