শ্রীলঙ্কা থেকে 'শঙ্কা' নয়, 'শিক্ষা' নিন
একেক দেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে দেশের সুযোগ বা চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। শ্রীলঙ্কায় যে ধরনের বাস্তবতার নিরিখে বর্তমানের অর্থনৈতিক দুর্দশা, রাজনৈতিক জটিলতা, শাসনতান্ত্রিক সমস্যা, জনরোষ বা জনবিক্ষোভ; এর সঙ্গে বাংলাদেশের বাস্তবতা মিলবে না। এমনকি অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আমাদের দেশের বাস্তবতা মিলবে না। শ্রীলঙ্কার চলমান সংকট বুঝতে হলে এর বাস্তব অবস্থা, বিবর্তন, রাষ্ট্র পরিচালনায় যাঁরা নিয়োজিত ছিলেন তাঁদের নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ বা অপপ্রয়োগের ভিত্তিতেই শ্রীলঙ্কার মূল্যায়ন করতে হবে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন।
শ্রীলঙ্কায় বহু বছর তামিল বিদ্রোহ-যুদ্ধ চলেছে। সেই প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কায় ২০০৯ সালে যখন রাজাপাকসে সরকার সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তামিল বিদ্রোহ দমন করে, তখন সিংহলি জাতীয়তাবাদ বা জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটে। এর মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কান সমাজ একটা বিভাজনের মধ্যে পড়ে। তামিল ও সিংহলিদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। যখন একটা সমাজ এ ধরনের বিভাজনের মধ্যে পড়ে তখন বড় ধরনের নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয়। সেই প্রেক্ষাপটে রাজাপাকসে পরিবারের উত্থান এবং দীর্ঘকাল শাসনকার্য পরিচালনার সুযোগ তৈরি হয়।
২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কায় গির্জায় বোমা হামলায় অনেক লোকের মৃত্যু হয়। এটা ইস্টার বোম্বিং নামে পরিচিত। এ ঘটনার পর মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা হয়। এখানে সিংহলিদের মধ্যে আবার বিভাজন তৈরি করে রাজাপাকসে পরিবার। এ ঘটনায় তারা সফলও হয়। এই যে সামাজিক প্রক্রিয়ায় বিভাজন এবং এক ধরনের ঘৃণা ছড়ানোর মাধ্যমে সহজ রাজনীতির জয়; সেই বাস্তবতা কিন্তু বাংলাদেশে এ মুহূর্তে নেই। এটা হচ্ছে সামাজিক দিক।