করোনার চতুর্থ ঢেউ ও সতর্কতা
মানুষ করোনা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা ভুলতে বসলেও করোনা আবার হানা দিয়েছে। সারা দেশেই তার লক্ষণ ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে আপাতদৃষ্টিতে সর্দি, জ্বর, কাশি দেখা দিলেও এগুলো করোনার ধরন কিনা- সেটা নিয়ে ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা।
সারা দেশে এখন অসুস্থতা নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেস্ট করলে হয়তো এর মধ্যে অজস্র করোনার রোগী পাওয়া যাবে। কিন্তু এখনো কারো কোনো শঙ্কা নেই, চিন্তাও নেই। যে কারণে করোনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অলক্ষ্যে করোনা বেড়ে গেলে তখন এর লাগাম টানা কঠিন হয়ে পড়বে। গত বছর ঈদুল আজহা পালন করতে মানুষের ভোগান্তির কথা সবাই যেন ভুলে গেছে। আমাদের এই জনপদে করোনা মহামারি হানা দিয়েছিল। লকডাউনের সেইসব দুঃসহ দিনের কথা মানুষ এত দ্রুত ভুলে গেছে যে এবারে সতর্কতা থাকলেও কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ঘুরে এসেছে গ্রামের বাড়ি। যাওয়া এবং আসার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা ভয়ংকর আকার নিতে পারে এ সতর্কতা গায়ে লাগায়নি কেউ। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরও বলার জন্য সব বলেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানানোর কোন পদক্ষেপ কোথাও চোখে পড়েনি। ফলে এবারে ঈদুল আজহা উদযাপনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত থাকায় করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকার সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যমূলক করলেও সেই নির্দেশনা মানেননি বেশিরভাগ মানুষ। ঈদে ঘরে ফেরা, ফিরতি যাত্রা, পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র, পশুর হাটসহ সর্বত্রই ছিল স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। রাস্তাঘাট, মার্কেট, লঞ্চ, বাস ও রেল স্টেশনসহ সব জায়গাতেই দেখা গেছে মাস্ক ছাড়াই মানুষের বেপরোয়া চলাচল। কোথাও মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যেও ছিল ব্যাপক উদাসীনতা। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলারও কোনো বালাই নেই। সবকিছু এমন ঢিলেঢালা চলার পরিপ্রেক্ষিতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। যদিও ইতোমধ্যে রাজধানীসহ সারাদেশের ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিয়েছে। কেউ ভুগছেন করোনায়, কেউ ডেঙ্গু জ্বরে। আবার মৌসুমি জ্বর ও শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের জ্বরেও আক্রান্ত অনেকে। অর্থাৎ বর্তমানে চার ধরনের জ্বরে ভুগছে মানুষ। যদিও কোভিডের উপসর্গ এবার অন্যবারের তুলনায় বেশির ভাগেরই দেখা যাচ্ছে মৃদু।