কথায় কথায় সে খালি সন্দেহ করে
প্রশ্ন: আপা, সালাম নেবেন। আমার বয়স ৩৬। আমি ১২ বছর যাবৎ বিবাহিত। আমার স্বামী আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের প্রথম দিকে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বদভ্যাস আমার নজরে আসা শুরু হয়। আমার পরিবার প্রথম থেকেই তাঁকে পছন্দ করেনি। কিন্তু আমি তাঁর প্রেমে অন্ধ হয়ে পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁকে বিয়ে করি। তিনি কথায় কথায় আমাকে সন্দেহ করেন। বিয়ের আগে আমার যেসব ছেলে বন্ধু ছিল, বিয়ের পর আমার স্বামী তাদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ রাখতে দেননি। এমনকি আমার খালাতো বা চাচাতো ভাইদের সঙ্গেও মেলামেশা তিনি ভালো চোখে দেখেন না। কোথায় যাই, না যাই, তা নিয়ে তিনি সব সময় খবরদারি করেন। সব সময় আমার ফোন চেক করেন। আমার চলাফেরা, পোশাক, সাজগোজ প্রতিটি বিষয় নিয়েই তাঁর আপত্তি। এসব নিয়ে আমি খুব মানসিক যন্ত্রণায় আছি। তাঁর এমন সন্দেহবাতিক স্বভাবের কারণে আমার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আমাদের কোনো সন্তান নেই। আমার কোনো পিছুটানও নেই। প্রায়ই আমার এক কাপড়ে তাঁর সংসার ছেড়ে বের হয়ে আসতে ইচ্ছা করে। ইচ্ছা করে নিজের জীবন শেষ করে দিতে। দিনের পর দিন তাঁর এসব আচরণ আমি আর সহ্য করতে পারছি না। পরামর্শ দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা
উত্তর: প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আপনার স্বামী আপনার সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করছেন, তা মানসিক নির্যাতন। এ ধরনের মানসিক নির্যাতন বাংলাদেশের আইনে পারিবারিক সহিংসতার আওতাভুক্ত হবে। পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তি কর্তৃক পরিবারের অপর কোন নারী বা শিশু সদস্যের ওপর শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতিকে বোঝাবে। আপনি যে অভিযোগ করছেন, আপনার স্বামী আপনাকে প্রতিনিয়ত সন্দেহ করেন। শুধু তা–ই নয়, আপনার চলাফেরা ও স্বাভাবিক জীবনযাপন তিনি নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করেছেন। এই আইন অনুযায়ী মৌখিক নির্যাতন, অপমান, অবজ্ঞা, ভয় দেখানো ইত্যাদি আচরণ পারিবারিক সহিংসতা হিসেবে গণ্য করা হবে। এ ছাড়া হয়রানি, ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ অর্থাৎ স্বাভাবিক চলাচল, যোগাযোগ বা ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা মতামত প্রকাশে বাধা দেওয়া, কথা শোনানো, পুরুষতান্ত্রিক আচরণ দিয়ে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করা, সন্দেহ করা এগুলোও সহিংসতার আওতাভুক্ত হবে।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- দাম্পত্য জীবন
- সন্দেহ