আগুন-বন্যায় কীভাবে আসছে ঈদ
বন্যা-আগুন-দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অসহায় মানুষদের কাছে ঈদের আনন্দ কতটা? নাকি কেবল ঈদের চাঁদ দেখে ও ঈদ আনন্দের গল্প শুনেই কাটবে তাদের ঈদ?
আমরা কী অন্যকে ঈদের আনন্দ-খুশিতে শামিল করে পূর্ণ করে নেব না-নিজেদের ঈদ-আনন্দ। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নিকটবর্তী হওয়ার অপার সুযোগ কি পূরণ করব না ত্যাগের মহিমায়? এসব প্রশ্নের উত্তর যদি না হয়, তাহলে ঈদ সকলের নয়, কেবল কতিপয় ব্যক্তি-বিশেষের-বিশেষ শ্রেণী-পেশা মানুষের। যা ঈদের প্রকৃত শিক্ষা ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
ঈদ আসছে, ঈদ এলো, ঈদ চলে গেলো। ফি-বছর এভাবেই মুসলিম বিশ্বে আসে দুটো ঈদ। এক. ঈদ-উল ফিতর। দুই. ঈদ-উল আযহা। বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠে নব্বই শতাংশেরও বেশি। পর পর দু'বছরের করোনার মস্তো বড়ো ধাক্কা পেরিয়ে এবার ঈদ এসেছে উৎসবের আমেজে-চেনা রংয়ে-বর্ণিল আয়োজনে। পুরোপুরি সত্য হিসেবে একথাকে মেনে নিতে হোঁচট খেতে হচ্ছে বারংবার।
সত্যি সত্যি ঈদ উৎসবের আমেজে এলেও সেটা সবার জীবনে আসেনি, সব পরিবারে তো নয়ই। এবারের ঈদ-উল আযহা এমন একটা সময়ে উদযাপিত হচ্ছে যখন দেশের একটা বিভাগের প্রায় পুরোটাই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে-বন্যাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। সিলেট বিভাগতো বটেই, বন্যা মোকাবেলা করে বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ।
দিনযাপনই তাদের জন্য হয়ে উঠেছে দুরূহ ও যুদ্ধাবস্থার শামিল। ফলে, ঈদের উৎসবে শামিল হওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। হয়তো নিয়ম মেনে ঈদের নামাজে শামিল হবেন। পরিবারের ছোটদের আবদার পূরণের দায়ে ঘরে-উপদ্রুত জায়গায়-আশ্রয় স্থানে কিছু রান্নারও আয়োজন হবে। কিন্তু ঈদের যে আনন্দ- উৎসব সেটা ভেতর থেকে আসবে না। কারণ তাদের পক্ষে সেই আনন্দ-উৎসব করার সামর্থ্য নেই-সক্ষমতা হারিয়ে গেছে বন্যার পানির তোড়ে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি