সয়াবিনের বিকল্প কতটা সহজ?
প্রথমত কথা হচ্ছে, বাজার থেকে আমরা সয়াবিন তেলের নামে যা কিনি, তার বিরাট অংশই সয়াবিন নয়। এগুলো হচ্ছে পাম তেলের পরিশোধিত ভার্সন। সয়াবিন তেল হতে হলে তার কাঁচামাল হতে হবে সয়াবিন বিজ। কিন্তু আমাদের দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে মূলত পাম তেল আমদানি করে এবং সেগুলো তাদের কারখানায় রিফাইন করে বোতলের গায়ে ‘সয়াবিন’ লিখে বাজারজাত করে। ক্রেতারাও সেগুলো সয়াবিন তেল হিসেবেই কেনেন। আবার পাম তেলও বিক্রি হয়। অর্থাৎ যেগুলো পুরোপুরি রিফাইন্ড নয়। এই তেলের দাম তুলনামূলকভাবে কম।
পরিসংখ্যান বলছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের ভোজ্যতেলের বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশই পাম তেলের দখলে। আর দেশে যে পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি হয়, তার দ্বিগুণ আমদানি হয় পাম তেল—যার বিরাট অংশই কারখানার কারসাজিতে সয়াবিন নামধারণ করে বাজারে আসে। অবশ্য তেল আমদানিকারকদের দাবি, পাম তেলকে পরিশোধন করে সয়াবিন নামে বিক্রি করার সুযোগ নেই। কারণ তেল জমাট বাঁধে, সয়াবিন বাঁধে না। ফলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উচিত এ বিষয়ে একটা গভীর অনুসন্ধান করা এবং মানুষকে জানানো যে, সয়াবিনের নামে আমরা যা খাচ্ছি তার কত শতাংশ আসলেই সয়াবিন তেল এবং কত শতাংশ পাম অয়েল। বোতলের গায়ে সয়াবিন লিখতে হলে সেটি অবশ্যই সয়াবিন বিজ থেকে উৎপাদিত হতে হবে। কারণ আখ দিয়ে তৈরি গুড়ের নাম নিশ্চয়ই খেজুরের গুড় হতে পারে না।