জলে ভাসা ঈদ তাদের
একপাশে যদি থাকে কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষজনের ছবি, অন্যপাশে যথারীতি বিষাদের ছায়াঢাকা কিছু মুখ। সেই মুখের তালিকায় আছেন বুড়িগঙ্গার নৌ-শ্রমিকরাও। ঈদ নিয়ে তাদের মনে ঢেউ ভাঙে না। যাত্রী পারাপার করে কিছু বাড়তি আয় হলেই খুশি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, রাজধানীর সদরঘাট এলাকার বুড়িগঙ্গার তীরে অন্তত দুইশ’ নৌ-শ্রমিকের ঈদ এবার পানিতেই কাটবে।
বুড়িগঙ্গাকে ঘিরে যাদের জীবিকা, তাদের অনেকের পরিবার থাকে দূরে। বাড়তি আয়ের আশায় সেই মানুষগুলোর ঈদ কাটবে নৌকায়। এমনও অনেকে আছেন, যাদের ডাঙায় নেই ঘর, নৌকাই আশ্রয়।
সদরঘাট টার্মিনালেও আছেন এমন শত শত শ্রমিক; যাদের জীবন কাটছে বুড়িগঙ্গায় ভেসে। ঈদ বা অন্য কোনও উৎসব তাদের স্পর্শই করে না।
পাঁচ বছরের শিশু ও স্বামীকে নিয়ে এক দশক ধরে নৌকায় বাস করছেন রত্না বেগম (২৮)। দিনের বেলায় কাঁচাবাজার কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে রাত কাটে নৌকাতেই।
স্বামী বেলাল হোসেন নৌকার মাঝি। হাতে সমস্যার কারণে বেশি নৌকা বাইতে পারেন না। স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় পরিবারটির জীবন কাটছে নৌকায়।
রত্না বললেন, ‘একসময় ভিক্ষা করতাম। বিয়ের পর কাজকর্ম শুরু করি। আমাগো জীবনে ঈদ আসে নাই। এবার বাচ্চাটার জন্য নতুন জামা কিনছি। ও তো আর ঈদ বুঝে না। ওরে একটু সেমাই টেমাই রাইন্ধা দিমু। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া অনেক সুখেই আছি।’
৩৫ বছর ধরে নৌকা চালাচ্ছেন আবদুল কুদ্দুস (৬৮)। স্বাধীনতার পর জীবিকার তাগিদে ঢাকায় এসেছিলেন। প্রথম দিকে রিকশা চালালেও আশির দশক থেকে ঠাঁই করে নিয়েছেন বুড়িগঙ্গায় কোলে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- নৌকায় বসবাস
- নৌ-শ্রমিক