ফেরি সংকটে ভুগবে মানুষ
করোনার কারণে গাড়ি চলাচল কম থাকলেও গত ঈদুল আজহার সময় ফেরি পারাপারে ঘাটে ঘাটে সইতে হয়েছে অপেক্ষার ভোগান্তি। মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসায় ধারণা করা হচ্ছে, আগের দুই বছরের চেয়ে কয়েক গুণ মানুষ এবারের ঈদে গ্রামমুখী হবে। সেই চাপ সামলানোর সক্ষমতা দেশের দুই প্রধান ফেরিঘাট আরিচার পাটুরিয়া ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়ার নেই। ফেরি-স্বল্পতা এবারও ভোগাবে। মাওয়ায় বাস পারাপার বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ হবে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের যাত্রীদের।
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পর ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলের ১০ জেলার যাত্রীদের ঢাকা ছাড়ার পথ হয়ে উঠেছে মাওয়া ঘাট। পদ্মা সেতু চালু না হওয়ায় এবারের ঈদেও তাই ফেরিই হবে ঘরে ফেরার ভরসা। তবে পদ্মা নদীর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে ফেরির সংখ্যা মাত্র ছয়টি। আগের বছরের চেয়ে ভিড় বাড়বে, তা নিশ্চিত হলেও ফেরির সংখ্যা কমেছে।
শিমুলিয়া ঘাট সূত্র জানিয়েছে, অন্য বছর ঈদে ১৭ থেকে ১৮টি ফেরি সচল থাকত। গত বর্ষায় দেড় মাসের ব্যবধানে পাঁচবার পদ্মা সেতুর খুঁটিতে ধাক্কার ঘটনায় সন্ধ্যা ৬টার পর ফ্ল্যাট ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। পরে ফেরি চালু হলেও পারাপার করা হচ্ছে মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, পিকআপ। আট মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস পারাপার।
অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, দিনে চলাচল করে ছয়টি ফেরি। এত কম ফেরি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্টসাধ্য। এখন ঘাটে আসার পর একটি গাড়ি আধা ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে ফেরিতে উঠতে পারে। ঈদে গাড়ির চাপ বাড়লে সময় আরও বেশি লাগতে পারে।
ফেরি কমলেও ঈদে মাওয়া ঘাট থেকে ২৪ ঘণ্টা লঞ্চ চলবে। ৮৩টি লঞ্চ রয়েছে এই নৌপথে। এ ছাড়া দিনে চলবে স্পিডবোট। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় কিছু ফেরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যেন ২৪ ঘণ্টাই ফেরি চলতে পারে। ঈদের চাপ সামাল দিতে এই সপ্তাহেই বাড়তি একটি অস্থায়ী ঘাট নির্মাণ করা হবে।