![](https://media.priyo.com/img/500x/https://cdn.ajkerpatrica.net/contents/cache/images/720x0x1/uploads/media/2021/04/21/3a0f73d7c94f1d74505e7debf2af2ee1-607fdc354b05c.jpg)
ট্যাবু ভাঙা যায়
নারীদের জন্য মাসিক একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এখনো এ নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পান অনেক নারী। অনেকে বিশ্বাস করেন নানা কুসংস্কার। এর মাঝেই মাসিক নিয়ে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে, যা জেনে মন ভালো হয়ে যায়। তেমনি একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে আজকের পত্রিকার ময়মনসিংহ সংস্করণে। ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার বিদায়ী শিক্ষার্থীরা নিজেদের চাঁদার টাকা দিয়ে অনুজ শিক্ষার্থীদের জন্য হাইজিন স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন উপহার দিয়েছে। সাধারণত দেখা যায়, অনুজ শিক্ষার্থীরা তাদের চাঁদার টাকা দিয়ে বিদায়ী অগ্রজদের কিছু না কিছু উপহার দেয়। কিন্তু বিদ্যাময়ীর বিদায়ী শিক্ষার্থীরা উল্টো অনুজদের উপহার দিয়েছে। আর সেই উপহারটি যে কত উপকারী, তা নারীমাত্রই বোঝেন। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগে খুশি বিদ্যাময়ীর শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকেরাও।
যার প্রয়োজন হবে, ভেন্ডিং মেশিনে একটি কার্ড স্ক্যান করলেই স্যানিটারি প্যাড বেরিয়ে আসবে। স্কুল চলাকালে হঠাৎ করে কারও মাসিক শুরু হলে ভেন্ডিং মেশিনটি সাহায্য করবে। ট্যাবু ভেঙে কিছু কথা এখানে বলা দরকার। সাধারণত ৮ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে মেয়েদের মাসিক শুরু হয়। গড় হিসাবে ১২ বছর বয়সের মধ্যে অধিকাংশ মেয়ের মাসিক শুরু হয়ে থাকে, অর্থাৎ স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালেই এই শারীরিক প্রক্রিয়ার শুরু। মাসিক নিয়ে ভুল ধারণাগুলোর একটি হলো, মাসিকের রক্তের সঙ্গে শরীরের দূষিত রক্ত বের হয়ে যায়। কিন্তু মাসিকের সময় যে রক্তস্রাব হয়, তা শরীরের সাধারণ রক্ত। জরায়ুর শ্লেষ্মাঝিল্লির ভেতরের রক্তবাহী নালিকাগুলো ছিঁড়ে রক্তস্রাব হয়। এ সময় পুষ্টিকর খাদ্য ও বিশ্রাম জরুরি। মাসিকের সময় হিমোগ্লোবিন, আয়রনের ঘাটতি হয়। তাই এই সময় পর্যাপ্ত পানি, ক্যালসিয়াম ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এ সময় ব্যায়াম করলে মন চাঙা হয়, শরীরের ব্যথাও কম অনুভূত হয়।
এসব সচেতনতার পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এ সময়টিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। সে জন্য স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করা ভালো। স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করার ব্যাপারটি অনেকের কাছেই অপছন্দনীয়, রীতিমতো ট্যাবু। তাই গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখা যায়। মাসিকের সময় সচেতনতা ও স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের পক্ষে বিজ্ঞাপনগুলো যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। কিন্তু অনেকে এখনো অস্বাস্থ্যকর কাপড় বারবার ব্যবহার করে থাকেন, যেগুলো ত্যানা বা ন্যাকড়া হিসেবে পরিচিত। এগুলো বরাবরই নানা রকম স্ত্রীরোগের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। আবার স্যানিটারি প্যাডও একটি নির্দিষ্ট সময় পর ফেলে দিতে হয়। নতুবা জরায়ুমুখে ইনফেকশনের আশঙ্কা রয়ে যায়।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পিরিয়ড
- স্যানিটারি প্যাড