ধর্ম ও কর্ম
ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েই মানুষের জীবন অর্থবহ হয়ে ওঠে। পবিত্র রমজান মাসে একজন মুসলমানের জীবনে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক আধ্যাত্মিক জীবনযাপনে অভূতপূর্ব মর্যাদা ও কৃচ্ছ্র সাধনের দ্বারা অনির্বচনীয় শৃঙ্খলাম-িত হয়ে ওঠে। সুতরাং এ মাসের মর্যাদা রক্ষা করে চলা ও এর তাৎপর্য অনুধাবন অর্জনের জন্য বেশ কয়েকটি উপায় উপলব্ধির অবকাশ রয়েছে। এর মধ্যে এ মাসে ‘মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী’ হিসেবে পবিত্র কোরআন শুধু পাঠ নয় জীবনযাপনে তা অনুসরণের চেষ্টা করা, রোজা রেখে খাদ্য-পানীয় গ্রহণে শুধু বিরত থাকা নয় এর বাস্তবিক অবস্থা অনুধাবনের চেষ্টা করা, কর্মভাবনা ও বাস্তবায়নে কৃচ্ছ্র সাধন, আত্মশুদ্ধি, অন্যের দুঃখ-কষ্টের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ এবং সমানুভূতি পোষণ করা, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগে মানব কল্যাণকে প্রধান্য দেওয়া, সব বিপদাপদ মোকাবিলায় ধৈর্যধারণ করা দায়িত্ব ও কর্তব্য।
এই রমজান মাসেই ২৭ তারিখে (৬১০ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুলাই, সোমবার) বিশ^ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর কাছে প্রত্যাদেশ (ওহি) প্রেরিত হয় পাঠ করো তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ থেকে। পাঠ করো। আর তোমার প্রতিপালক মহিমানি¡ত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন- শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত না।’ (৯৬তম সুরা আলাক। আয়াত ১-৫)। এটিই আল কোরআনের প্রথম অবতীর্ণ ওহি এবং এটা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, কলমের সাহায্যে শিক্ষা দেওয়ার নির্দেশ আল-কোরআনের মাধ্যমে মানবজাতির প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রথম ও প্রধান নির্দেশ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, মানব জাতির ঐতিহাসিক মুক্তির এই নির্দেশনা এসেছে মাহে রমজানে। এই নির্দেশনা অন্ধকার থেকে আলোর পথে আসার এবং অজ্ঞানতার বেড়াজাল পার হওয়ার অনুপ্রেরণা। কোরআন মানুষের দিশারী এবং এর নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে মানুষ পেতে পারে সঠিক ও কল্যাণপ্রদ জীবনযাপনে যাবতীয় পরামর্শ ও প্রেরণা। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শংকর দয়াল শর্মা কোরআনকে অতিশয় তাৎপর্যপূর্ণ অনুধাবন-অনুসরণীয় ঐশী কিতাব হিসেবে এর থেকে নির্দেশনা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন মুসলমানরা কোরআনের তাৎপর্য অনুধাবনে সক্ষম হলে তারা দিশেহারা হবে না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ধর্ম
- ধর্মবিশ্বাসী
- মানসিক স্বাস্থ্য