বিদ্যুৎ বিতরণ সক্ষমতা বাড়াতে ২২০০ কোটি টাকার প্রকল্প
রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিতরণের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রকল্প নিয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)। ‘ঢাকার ডেসকো এলাকায় বৈদ্যুতিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে দুই হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তায় বৈদেশিক ঋণ এক হাজার ২৩১ কোটি টাকা, সরকারের ঋণ ৪৪৬ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৯৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটির প্রথম প্রস্তাবনায় মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যয় কমেছে প্রায় ৮৫ কোটি টাকা।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। একনেক সভায় উপস্থিত থেকে সভার চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পটির বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) এ কে এম ফজলুল হক বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা মেনে অনেক খাতেই ব্যয় কমানো হয়েছে। এর পরই মূলত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি একটি সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্প, এটি পাস হলে একদিকে যেমন ডেসকোর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে। ’
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি পাস হলে ডেসকোর আওতায় নতুন করে দুই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যমান গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে ০.৩৩ শতাংশ সিস্টেম লস কমিয়ে আনবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদনের পর চার বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে ডেসকো।
গ্রাহকদের জন্য নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ দিতে বিতরণব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একাংশ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের ৪০০ কিলোমিটার এলাকা ডেসকোর অন্তর্ভুক্ত। এসব এলাকা অত্যন্ত জনবহুল ও শিল্প-কারখানা রয়েছে। প্রতিনিয়ত চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যমান বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় বেশির ভাগ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন ও বিতরণ লাইন ওভারলোডেড অবস্থায় আছে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে লো ভোল্টেজ সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া সিস্টেম লসের মাত্রাও বেশি। এসব সমস্যা নিরসনে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটিতে ১০০ কিলোমিটার ১১ কেভি ভূগর্ভস্থ কপার কেবল কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৮ কোটি ৯৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। প্রকল্পটিতে ৮২০টি দুই ধরনের বিতরণ ট্রান্সফরমার ও ১০০টি রিং মেইন ইউনিট (আরএমইউ) কিনতে ৬৫ কোটি ৩২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। এখানে গড়ে একেকটির দাম পড়ছে সাত লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৭০টি ট্রান্সফরমার সুরক্ষা সরঞ্জাম ও ক্যাপাসিটর ব্যাংক কেনা হবে।