একজন কাজল দাস ও সুষম উন্নয়ন
চেম্বার শেষ করে প্রতিদিন ঘণ্টাখানেক লোকনাথ দিঘির পাড়ে হাঁটি। তখন ফাগুন মাসের মাঝামাঝি হলেও ঠান্ডাটা পুরোপুরি যায়নি। খেয়াল করলাম, লোকনাথ দিঘির বাঁধানো পাড়ের বেশ কিছুটা অন্ধকার জায়গায় একটি গাছের নিচে পুরোনো একটি ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে বসে থাকেন একজন। শরীরে তেল চিটচিটে একটি পুরোনো সোয়েটার, তার ওপর শরীর থেকে বড় মাপের কোট, লুঙ্গির সঙ্গে এই পোশাক খুবই বেমানান। মাথায় ছেঁড়া একটি পাতলা ওয়ান টাইম ক্যাপ, দিঘির পাড় প্রতিবার প্রদক্ষিণ করার সময় তাঁর পাশ দিয়ে যখন যাই, শুনি তিনি কাশছেন। প্রতিবারই সেই পরিচিত কাশি, মনের অগোচরে শঙ্কা পেয়ে বসে।
প্রতিদিন ভাবি, কাছে গিয়ে একটু আলাপ করি, জিজ্ঞেস করি ডাক্তার দেখিয়েছেন কি না। কিন্তু সংকোচ হয় যদি কিছু না বলেন, ভালোভাবে আমাকে গ্রহণ না করেন! সেদিন কাশির মাত্রাটা একটু বেশিই মনে হলো। অবশেষে মধ্যবিত্তের সংকোচ কাটিয়ে তাঁর কাছে গেলাম। প্রথমে ওজন মেপে নিজের অতিরিক্ত ওজনের জন্য হাপিত্যেশ করে, এ-কথা সে-কথা বলে আলাপ জমাতে চেষ্টা করলাম। প্রথম দিকে তাঁর দিক থেকে কিছুটা জড়তা লক্ষ করলেও ধীরে ধীরে বলতে থাকলেন নিজের কথা। আমার পেশা জানার পর আরও সহজ হয়ে গেলেন।