গণপরিবহন এক ছাতার নিচে আনতে হবে
কাজী সাইফুন নেওয়াজ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় (বুয়েট)-এর দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক। রাজধানী ঢাকার যানজট, নগর পরিবহন ব্যবস্থা ও গণপরিবহন সমস্যাসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন দেশ রূপান্তরের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সম্পাদকীয় বিভাগের আহমেদ মুনীরুদ্দিন
দেশ রূপান্তর : রাজধানী ঢাকা পৃথিবীর শীর্ষ যানজটের মহানগর হিসেবে ইতিমধ্যেই তকমা পেয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক আন্তর্জাতিক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। করোনা মহামারী পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর চলতি সপ্তাহের কয়েকদিনে আবারও অসহনীয় যানজটে নাকাল হয়েছে ঢাকাবাসী। যানজটের এই চলমান সংকটকে কীভাবে দেখছেন?
সাইফুন নেওয়াজ : পৃথিবীর অনেক দেশেই একটা সময় যানজট ছিল। ৪০/৫০ বছর আগে বিশেষ করে, ইউরোপ আমেরিকায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল বেশি। তারাই ব্যক্তিগত গাড়ি আবিষ্কার করেছিল। যখন তারা দেখল ব্যক্তিগত গাড়িতে যানজট বেশি হয় এবং রাস্তা দখল করে ফেলে বেশি তখন তারা বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। তারা পলিসি নেয়। বিকল্প ব্যবস্থা যাতে কিনা মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে দূরে সরে আসে। আবার তারা এরমধ্যে রাস্তাঘাট তৈরি করছিল পরিকল্পিতভাবে। রাস্তায় দেখা গেল যে প্রতি ঘণ্টায় অল্পসংখ্যক গাড়ি চলছে কিন্তু রাস্তা তারা অনেক প্রসারিত করেছে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই কাজগুলো করেছে, কারণ রাস্তা বাড়ানো তো সহজ বিষয় নয়। আমাদের ঢাকা শহরের রাস্তাটা সেভাবে পরিকল্পনা করা হয়নি। তা যদি আমাদের পুরান ঢাকার কথা চিন্তা করি তাহলে বুঝতে পারব। বিশ্বের অন্যান্য দেশের পুরনো শহরগুলোতে অনেক বড় বড় রাস্তা। আর ঢাকায় অনেক অনেক ছোট অলিগলি রাস্তা। যখন এই রাস্তাগুলো তৈরি করে তাদের মাথায় ছিল ঘোড়ার গাড়ি যদি চলতে পারে সেই অনুযায়ী রাস্তা তৈরি করা। ঢাকা শহরের পরিধি বাড়বে মানুষ বাড়বে সে কথা তারা চিন্তা করেনি। ফলে পুরান ঢাকার রাস্তার দুই পাশে ঘরবাড়ি। পুরনো আমলের সেই ভুল বর্তমান সময়ে আমরাও করছি। রাস্তাগুলো হয়ে যাওয়ার পরে তার পাশে সুউচ্চ বিল্ডিংগুলো আমরাও করছি এখনো। আমাদের চিন্তাগুলো ঘোড়ার আমলে যেমন ছিল বর্তমান প্রাইভেটকারের আমলেও একই রয়েছে। সম্প্রতি পূর্বাচল নতুন কিছু সিটি হচ্ছে, সেখানে চেষ্টা করা হচ্ছে। ইন্টারসেকশনগুলো বড় করা হচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে চিন্তাগুলো না করাতে ঢাকা শহরটা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে।