সাংবাদিকতার বিবর্তন : প্রতিপক্ষ ও স্বাধীনতা
বর্তমান যুগে সাংবাদিকতার ব্যাপ্তি ও প্রভাব বিস্ময়করভাবে বিস্তৃত। মিডিয়া বা সংবাদপত্র আজ কেবলই ইন্ডাস্ট্রি বা শিল্প নয়, মিডিয়া আজ অসীমান্তিক-আন্তর্জাতিক, যা সব জাতি, সমাজ ও বিশ্বপরিমণ্ডলকে প্রকাশ করে, অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিত করে। এই কিছুকাল আগেও সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের প্রকাশনা ছিল ছাপাখানাকেন্দ্রিক; আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতিতে সে ব্যাপ্তি আজ রাষ্ট্রের সীমানাই কেবল ছাড়েনি-সম্প্রসারিত হয়েছে অভূতপূর্ব; যুগের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছড়িয়েছে গোলার্ধের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। দৈনিক ও সাপ্তাহিকের ‘অনলাইন এডিশন’ আজ এমন নতুন সংযোজন, যা গণমাধ্যমের পাঠকসংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে।
এ ছাড়া সংযোজিত হয়েছে স্যাটেলাইট টিভি, অনলাইন টিভি, এফএম রেডিও, কমিউনিটি ও সিটিজেন রেডিও এবং ব্লগ, যা গণযোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে, একইসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের পূর্বেকার নিয়ন্ত্রণ ও কণ্ঠ রোধের পুরোনো মানসিকতাগুলোকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসার প্রমাণিত করেছে। মোটকথা, উগ্র-ধর্মকেন্দ্রিক বা অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতন্ত্রী কিছু রাষ্ট্র ও অঞ্চল বাদে সংবাদমাধ্যম আজ সার্বিকভাবে পূর্বেকার যে কোনো সময়ের চেয়ে স্বাধীনতামুখী এবং সার্বভৌমত্ব প্রত্যাশী, যা এক তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। সংকট, সীমাবদ্ধতা শেষ হয়েছে, নিগ্রহ-নিপীড়নমুক্ত হয়ে সাংবাদিকতার পেশা রাহুমুক্ত হয়েছে-এমনটি বলার অবকাশ অবশ্য নেই। তবে পরিস্থিতির তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি স্বীকার করা সংগত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
এত সব সাফল্য বা অগ্রগতি তুলে ধরেও বর্তমান যুগের সাংবাদিকতার কিছু সবল প্রতিপক্ষ আছে। আমার বিশ্বাস, এসবের আলোচনা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার স্বার্থে প্রাসঙ্গিক হবে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- সাংবাদিকতার বিবর্তন