গর্ভাবস্থায় নারীর দাঁতের যত্ন
আমাদের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশেই গর্ভবতী মায়েরা তাদের মুখগহ্বরের তেমন যত্ন নেন না। এই কারণে তাদের মধ্যে অনেক বেশি দাঁতের সমস্যার দেখা দেয়। ঠিক মতো চিকিৎসা না নিলে পরবর্তীতে তারা নানান রকমের দাতেঁর সমস্যায় ভোগেন। গর্ভাবস্থায় দাঁতের রোগ কীভাবে সৃষ্টি হয়? গর্ভাবস্থায় একজন মাকে সন্তান প্রসবের জন্য তিনটি ত্রৈমাসিক অতিক্রম করতে হয়। এই চক্রে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মাড়িতে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে জিঞ্জিভাইটিসে পরিবর্তিত হয়।
এছাড়া রোগীর যদি চিকিৎসা না করা হয় তাহলে দাঁত ঢিলে হয়ে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। মাড়ি ফুলে যাওয়ার কারণে রোগী দাঁত ব্রাশ বা ফ্লস করার পরেও মাড়ি থেকে রক্তপাত অনুভব করেন। শক্ত খাবার খাওয়ার সময় মাড়িতে অশুষ্টি হতে পারে। এসব সমস্যা দেখা দেওয়ার পরেও যদি রোগী ডেন্টাল সার্জনের কাছে না যান তবে এই সমস্যা পেরিওডন্টাল রোগে পরিণত হতে পারে। আর এই সমস্যা ডেন্টাল ইনফেকশন সৃষ্টি করে এবং দাঁত শিথিল করে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হতে পারে যা সংক্রমণ সুস্থ করতে বিলম্ব করে। গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে মিষ্টি খাবারের খাদ্যাভাস থাকলে সঠিকভাবে দাতেঁর যত্ন না নিলে প্রচুর ক্যাভিটির সৃষ্টি হয়। উপরন্তু এটি প্রেগন্যান্সি গ্রানুলোমা, জিনজিভাইটিস, প্রেগন্যান্সি এপুলিস, দুর্বল দাঁত, মুখের শুষ্কতা ও দাঁতের ক্ষয়ের মতন সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। এই সমস্যাগুলো সাংঘাতিক সমস্যা, যেমন অকালপ্রসব, বাচ্চার কম ওজন ও প্রি-ইকলম্পসিয়াতে পরিণত হতে পারে। যেভাবে এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে গর্ভবতী রোগী যেকোনো সময় সুপারফিসিয়াল ক্লিনিং এবং কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডেন্টালসার্জনের কাছে যেতে পারেন। তবে কিছু নির্দিষ্ট সময়ের পর দাঁতের রোগের চিকিৎসা করানো উচিত না। গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের অর্থাৎ ১৪ সপ্তাহ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে দাঁতের রোগের চিকিৎসা নেওয়া উচিত। বিশেষ দ্রষ্টব্য: গাইনোকোলজিস্টকে অবশ্যই গর্ভবতী মায়েদের দাঁতের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।