সিআরবির উদ্ভিদবৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য
করোনাভাইরাসের সর্বগ্রাসী থাবার কারণে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের বিষয়ে কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়। আর স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন মানেই নতুন নতুন হাসপাতাল তৈরি করা, চিকিৎসাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি করা, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং সর্বোপরি ব্যবস্থাপনায় একটা দক্ষতা, সক্ষমতা এবং শৃঙ্খলা আনা প্রভৃতি। করোনাভাইরাস স্বাস্থ্য খাতের বিশেষ করে জনস্বাস্থ্যের দুর্বল চেহারাটা আমাদের সামনে উন্মোচন করেছে। সারা দুনিয়ার কোনো রাষ্ট্রই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় খুব বেশি বাহাদুরি দেখাতে পেরেছে তেমন নয়। উন্নত দেশগুলোকেও মোটামুটি হিমশিম খেতে হয়েছে, যা তাদের নাকের পানি আর চোখের পানি এক করে ফেলেছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের বহুবিধ দুর্বলতার পরও মৃত্যুর সংখ্যা এবং সংক্রমণের হার বিবেচনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেক উন্নত দেশের তুলনায় কম সংহারি বলে অনেকে মনে করেন। তথাপি, যেহেতু করোনাভাইরাসের থাবা একটা দীর্ঘ মেয়াদে মানুষের সমাজে থেকে যাবে বলে জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা একটি কঠিন আশঙ্কার কথা বলছেন, সেহেতু বাংলাদেশকেও আগামী দিনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে, এ বিষয়ে দ্বিমতের কোনো সুযোগ নেই। আর স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের জন্য উন্নত এবং মানসম্পন্ন হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তাও অনস্বীকার্য। তাই, সারা বাংলাদেশেই বিভিন্ন বিভাগে এবং জেলা শহরে নতুন নতুন হাসপাতাল হচ্ছে। আমরা এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামেও নতুন হাসপাতালের প্রয়োজন। বিশেষ করে নগরের অধিবাসীদের বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য চট্টগ্রামে হাসপাতালের সংখ্যা অপ্রতুল। সুতরাং চট্টগ্রামে নতুন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার চিন্তা এবং পরিকল্পনাকে সবাই স্বাগত জানায়। কিন্তু সেটা সিআরবি হিলে কেন? সিআরবি হিলেই কেন হাসপাতাল নির্মাণ করতে হবে? চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের মানুষের কাছে সিআরবি হিল কী, সেটার প্রতি ন্যূনতম সম্মান ও শ্রদ্ধা না রেখে এভাবে ‘ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া উন্নয়ন চিন্তা’কে প্রতিহত করার জন্য সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে যে একটা প্রতিবাদের স্পৃহা তৈরি হয়েছে, সেটা অত্যন্ত ন্যায্য। আমি বিষয়টি এখানে আরও বিষদভাবে ব্যাখ্যা করতে চাই।