স্বাধীনতার ৫০ বছর: গিনেস বুকে নাম লেখানো লিনু
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সাধারণ মেয়ে’ কবিতাটি ভীষণ প্রিয় লিনুর। কবিতায় মালতী নামের সাধারণ মেয়েটি তাকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানান বাংলা সাহিত্যে নারী চরিত্র চিত্রণের সার্থক রূপকার শরৎচন্দ্রের প্রতি। বাস্তবে যদি নাও জেতেন দুঃখ নাই, তবে গল্পের সাধারণ মেয়েটি যেন জেতেন, ‘অপরাজেয় কথাশিল্পী’র কাছে এই প্রার্থনা করেন মালতী। শরৎ বাবু চাইলে তো কলমের এক আঁচড়ে সাধারণ মেয়েকে করে তুলতে পারেন অসাধারণ, দ্বিগ্বিজয়ী। সাধারণ মেয়ে এক এক করে সব বাঁধা পেরিয়ে পৌঁছুবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে, কবি গুরুর কল্পনার এই যে চাওয়া, সেটাকে খুব বেশি সত্য মনে হয় লিনুর কাছে।
জোবেরা রহমান লিনু কি তবে কবির কল্পনার সেই ‘সাধারণ মেয়ে’, যিনি প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিলেন নিজ নামে। কলমের আঁচড়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া আর বাস্তবে স্বনামধন্য হওয়ার পার্থক্যটি যে কত ব্যাপক, সেটা খুব ভালভাবেই অনুধাবন করেন বাংলাদেশ নারী টেবিল টেনিসের রানি গিনেস বুকে নাম লেখানো লিনু।
১৯৭৪ থেকে ২০০২; সুদীর্ঘ ২৮ বছরের ক্যারিয়ারে জাতীয় টেবিল টেনিসে শিরোপা জিতেছেন ১৬ বার। শুরু করেছিলেন মাত্র ৯ বছর বয়সে। আর শেষটা টানেন ৩৭ বছর বয়সে। ১৯৭৪ সালে ফাইনালে বড় বোন মুনিরা রহমান হেলেনের কাছে হেরে রানার-আপ হন। এখানে বলে রাখা ভাল, হেলেনের চেয়ে বয়সে ৮ বছরের ছোট লিনু। তার এই রানার-আপ হওয়াটা স্থায়ী হয়নি দুই বছরের বেশি। ১৯৭৭ সালে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ওঠে ১২ বছরের লিনুর মাথায়। জেতেন ট্রিপল ক্রাউন। এরপর দেশের টিটি আর লিনু সমার্থক।