৪৩ মামলায় আসামি প্রায় ২০ হাজার
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরবিরোধী বিক্ষোভের জেরে রাজধানীসহ কয়েকটি জেলায় হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নতুন করে আরও ১৩টি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে তিন দিনের ওই সংঘাতের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৩টি মামলা হলো। এসব মামলায় বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী এবং অজ্ঞাতনামাসহ প্রায় ২০ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। নতুন করে মামলা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে।
গত ২৬ মার্চ ও পরবর্তী দুই দিনে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এসব ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও পটিয়া, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও ফরিদপুরের ভাঙ্গায়ও সহিংসতা হয়। এসব ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ১৯টি। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে ৮টি, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৭টি, ঢাকায় ৪টি, কিশোরগঞ্জে ২টি এবং মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় ১টি করে মামলা হয়েছে।
বায়তুল মোকাররম এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, ৫০০-৬০০ জন আসামি
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা হয়। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য জানান।
ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ২৬ মার্চ রাতে মামলা হয়। মামলায় ৫০০ থেকে ৬০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
হরতালে সাংবাদিকদের ওপর হেফাজতের হামলা
নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের হরতালের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেসরকারি টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয় ক্যামেরা। ছিনিয়ে নেয়া হয় মোবাইল ফোন।
২৮ মার্চ, রোববার হরতালের সমর্থনে পিকেটিংয়ের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড ও সানারপাড় এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিকরা। এসময় আহত হন বৈশাখী টিভির রিপোর্টার আশিক মাহমুদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের রিপোর্টার রায়হান কবীর, গাজী টিভির রিপোর্টার রুবিনা ইয়াসমিন, ক্যামেরাপার্সন মাহমুদুর রহমান এবং আরটিভির একজন রিপোর্টার।
৩ দিনে ঝরে গেল ১৩ প্রাণ, হেফাজতের দাবি ১৭
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের তিন দিনের বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির দাবি দেশের তিন জেলায় তাদের ১৭ জন নিহত হয়েছে। ২৮ মার্চ, ঢাকায় হেফাজতের সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়— ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় একজন, চট্টগ্রামে চার জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ওইদিন হরতাল শেষে পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন।