একটি বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়ার প্রচেষ্টায় জাবি বিজ্ঞান ক্লাব
একটি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ কী? কোথায় নিহিত এর শক্তিমত্তার সবচেয়ে বড় আধার? জাতি কি সামনে এগুবে না পিছিয়ে পড়ে হামাগুড়ি দিতে থাকবে তার নিয়ামকই বা কী? এর প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ? ভূমির উর্বরতা? অর্থের যোগান? সমর সম্ভার? সন্দেহ নেই, এর সব কটিই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে, মনে হয়- এগুলোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এর মানব সম্পদ, একটি দক্ষ, শিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল জনগোষ্ঠী, যারা দেশ ও জাতির প্রয়োজনে নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিতে সদা প্রস্তুত। একটি জাতির ভবিষ্যৎ উন্নতি ও প্রগতি বহুলাংশে নির্ভর করে এর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, কিশোর, তরুণেরা কীভাবে গড়ে উঠছে তার ওপর।
একটি দূরদর্শী জাতি এ কারণে তাদের তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ ও সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করে। আপনি একটু ক্ষুদ্র পরিসরে ভাবুন। একটি হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েরা যখন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সুশিক্ষিত হয়ে সমাজে আলো ছড়াতে শুরু করে, এক প্রজন্ম আগেও যারা চারিদিকে অর্থ-বিত্তে প্রবল প্রতিপত্তিশীল ছিল, তারা কেমন যেন এদের সামনে ছায়া হয়ে যায়। একইভাবে একটি জাতি যদি তার তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারে, এক প্রজন্মের ব্যবধানেই আপনি হয়তো একটি যাদুকরী পরিবর্তনের দেখা পেতে পারেন। বিপরীতে, একটি জাতি যখন বিত্ত-বৈভবে বিভোর হয়ে বিলাস-বসনে গা ভাসিয়ে দেয়, এর তরুণ-যুবারা পরিশ্রম-বিমুখ হয়ে পড়ে, শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে পড়ে, তাদের মধ্যে অদক্ষতার পাশাপাশি বিভিন্ন নৈতিক বিচ্যুতিও দেখা দেয়, সমাজে নানাবিধ অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ফলে, উন্নতি-প্রগতির শিখরে উড্ডয়মান একটি জাতিকে দু-এক প্রজন্মের ব্যবধানেই হয়তো ভূতলে পতিত হতে দেখতে পারেন। এটি স্রেফ তত্ত্বের কচকচানি নয়, পৃথিবীর ইতিহাস এরকম বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী।