‘ব্যানার খুলে চলে যান, ওপরমহলের নির্দেশ সংবাদ সম্মেলন করা যাবে না’
সরকারি পাটকলকে বেসরকারি মালিকের হাতে তুলে দেওয়া, করোনা পরীক্ষার ফি প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে রংপুরে বাম জোটের সংবাদ সম্মেলন পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নগরীর গুপ্তপাড়া এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন শুরু করার আগেই পুলিশ এসে ওপর মহলের নির্দেশ আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বাধা দেয়। ফলে পণ্ড হয়ে যায় সংবাদ সম্মেলন। এ অভিযোগ করেছেন বাম জোটের নেতৃবৃন্দ।
বাম জোট নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, তারা কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে সেখানে ব্যানার টাঙিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিপিবির রংপুর মহানগর আহবায়ক রাতুজ্জামান রাতুল, বাসদ মাকর্সবাদী জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, বাসদ জেলা সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক কৃষক মজুর ফ্রন্টের আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতুসহ অন্যান্য নেতারা।
তবে বেলা ১২টার দিকে মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার দুজন এসআইয়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারে এসে ব্যানার খুলে ফেলতে বলেন এবং তাদের কমিউনিটি সেন্টার ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশ জানায়, ওপরমহলের নির্দেশ আছে কোনও সংবাদ সম্মেলন করা যাবে না। ফলে বাম জোটের ডাকা সংবাদ সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়।
পুলিশের এই অসাংবিধানিক আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট রংপুরের সমন্বয়ক ও বাসদ রংপুর জেলার আহ্বায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক শাহীন রহমানসহ জোটের অন্যান্য জেলা নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কথা বলার অধিকার প্রত্যেকটি নাগরিকের, রাজনৈতিক দলের আছে। জনগণ এবং রাজনৈতিক দলের মত প্রকাশের এই অধিকার সংবিধানে সংরক্ষিত আছে। অথচ এই দুর্যোগময় মুহূর্তে, প্রবল সংকট যখন মানুষ মোকাবিলা করছে সেই সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মানুষের কথা বলার গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা বিশেষভাবে রংপুরের পুলিশ প্রশাসনের কথা বলতে চাই। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য তাদের কাছে লিখিত অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি করেছে তারা। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোনও কর্মসূচি পালন করতে গেলেও হামলা ও গ্রেফতার করছে পুলিশ। বলছে প্রোগ্রাম করার কোনও অনুমতি নেই। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য লিখিতভাবে আবেদন করলেও তারা অনুমতি দেয় না। করোনা পরিস্থিতির অজুহাত দেখিয়ে কর্মসূচিতে বাধা দেয়। অথচ বাজারে, রাস্তাঘাটে সর্বত্র হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাফেরা করছে, সেদিকে তাদের নজর নেই। সেখানে প্রশাসন নির্বিকার। কিন্তু রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচি পালনের ব্যাপার এলেই প্রশাসন খড়গহস্ত।