ব্যাংকিং খাতের নীতিনির্ধারকদের পথপ্রদর্শক
আল্লাহ মালিক কাজেমী স্যার ছিলেন দেশের ব্যাংকিং জগতের এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। একজন সৎ, মেধাবী, বিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। স্যারের তীক্ষ জ্ঞান, যৌক্তিক পদক্ষেপ ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে উপকৃত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা দেশের পুরো ব্যাংকিং খাত। আর সমৃদ্ধ হয়েছে আমাদের বর্ধনশীল অর্থনীতি। নিজ কর্মগুণে তিনি দেশ-বিদেশের ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টদের পরম শ্রদ্ধার পাত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সবার ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছেন।
তিনি তার প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও বাস্তবধর্মী চিন্তাচেতনার মধ্য দিয়ে উপহার দিয়েছেন বাস্তবধর্মী নীতি, যা আমাদের আগামী দিনের পথ চলার একটি সুনির্দিষ্ট নকশা।ব্যাংকিং খাতের নীতিনির্ধারকদের যে ধরনের কর্মপ্রাণ ও সহযোগিতামূলক হওয়া উচিত, তার মূর্তমান প্রতিকৃৃতি ছিলেন আল্লাহ মালিক কাজেমী স্যার। দেশের ব্যাংকিং খাতকে সহজীকরণের জন্য বহু ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করেছেন। দেশের অর্থনীতি, বৈদেশিক মুদ্রানীতি, নতুন উদ্যোক্তা, কর্মসংস্থানমুখী বিনিয়োগ, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন বিষয়ের পর্যালোচনা আমাদের দিয়েছে একটি সঠিক, যুগোপযোগী অর্থনৈতিক অবকাঠামো এবং ব্যাংকিং নিয়মনীতি। যেকোনো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাংক একটি দেশের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি।
আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের মুদ্রানীতি প্রণয়নে ও তার বাস্তবায়নে তিনি সবসময় মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নীতি প্রণয়নে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার দূরদর্শিতার কারণে আমরা এখন সহজেই বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করতে পারি।আল্লাহ মালিক কাজেমী স্যার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগদান করেছিলেন ১৯৭৬ সালে। টানা ৪৪ বছর তিনি দেশের আর্থিক খাতকে সেবা দিয়েছেন। মৃত্যু অবধি তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা হারালাম দেশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে, এক নিষ্ঠাবান কর্মবীরকে, যার সব মেধা ও মনন ঢেলে দিয়েছিলেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে।