চীনে জোর করে সংখ্যালঘুদের জন্মনিরোধের অভিযোগ
একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, চীনে উইগুর ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের জোরপূর্বক জন্মনিরোধ করা হচ্ছে৷ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে আসায় রীতিমতো নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ বেইজিং এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷
জার্মান গবেষক আদ্রিয়ান সেন্স সোমবার এই গবেষণাটি প্রকাশ করেন৷ সেখানে তিনি বলেন, জিনজিয়াং প্রদেশে চীনা কর্তৃপক্ষ উইগুরসহ অন্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের কোটার বাইরে সন্তান জন্মদানে বাধা দেয়৷ যদি কেউ গর্ভপাত করতে না চান, তাহলে তাকে আলাদা করে আটকে রাখার হুমকি দেয়া হয়৷
চীনের বিরুদ্ধে দশ লাখেরও বেশি উইগুর ও অন্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম, ‘পুনর্শিক্ষণ ক্যাম্পে' আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে৷ বেইজিং বলে যে, এই ক্যাম্পগুলো মূলত জব ট্রেনিং সেন্টার৷ সেখানে সন্ত্রাসবাদ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রশিক্ষণও দেয়া হয়৷
সেন্সের ডেটাভিত্তিক গবেষণাটিতে পাবলিক ডকুমেন্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে৷ এছাড়া জাতিসংঘের একটি প্যানেল চীনের ক্যাম্পগুলো নিয়ে যে তদন্ত করছিল, সেখান থেকেও তথ্য নেয়া হয়েছে৷ পরিস্থিতির শিকার নারীদেরও সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সেন্স৷
রিপোর্টে বলা হয়েছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নারীদের ওপর জোরপূর্বক আইইউডি (জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত ধাতব যন্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে৷ এমনকি জোর করে সার্জারিও করা হয়েছে৷
পরিস্থিতির শিকার নারীদের কেউ কেউ বলেছেন, তাদের মাসিক বন্ধের জন্য ইনজেকশনও দেয়া হয়েছে৷ আবার অনেককে ইনজেকশনের ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে, যেটা জন্মনিয়ন্ত্রণ ঔষধ খেলে হয়৷ অনেক সরকারি দলিল থেকে সেন্স এটা জানতে পেরেছেন যে, জিনজিয়াং অঞ্চলের গ্রামগুলোতে অনেক ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার মানুষদের মাঝে গর্ভধারণ সম্পর্কিত পরীক্ষার সংখ্যা বেড়ে যায়৷
সেন্স দেখিয়েছেন, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এসব অঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠী হানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার সম্প্রদায়গুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার থেকে বেড়ে গেছে৷ এই ঘটনার ঠিক এক বছর আগে, অর্থাৎ, ২০১৬ সালে এসব অঞ্চলে জন্মনিরোধের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে বেড়ে যায়৷