আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইসিসের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে এ পর্যন্ত বিশ্বে যে হামলাগুলো হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজানে হামলার ঘটনাটি অন্যতম। আজ এই হামলার চতুর্থ বার্ষিকী। এরই মধ্যে গত বছর ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের পতন ঘটেছে। কিন্তু তাদের যোদ্ধারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিশ্ব বাস্তবতাই বদলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আইসিস বা আল–কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা, তাদের কার্যক্রম এবং সামনে ধর্মীয়, জাতি ও বর্ণভিত্তিক উগ্রবাদের ঝুঁকি কতটা প্রবল, এই বিষয়গুলো বিচার–বিশ্লেষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি ইউরোপে করোনাভাইরাস মহামারি রূপ নিলে আইসিস তার অনুসারীদের ইউরোপে না যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পর এ নিয়ে একদিকে যেমন কৌতুকের সৃষ্টি হয়েছিল, তেমনি অনেকে এই নিয়ে স্বস্তিও বোধ করেছিলেন। কেননা ইরাক-সিরিয়া অঞ্চলে আইসিসের পতনের পর ইউরোপ থেকে যেসব ব্যক্তি এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, তারা কেবল যে স্বদেশেই ফিরছিল তা নয়, কেউ কেউ স্বদেশে সন্ত্রাসী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছিল। এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছিল যে তারা এখন নিজেরাই ‘রিক্রুটার’ হয়ে উঠছে, ফলে ইউরোপের ভেতরেই এখন সাংগঠনিকভাবে এই ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়বে।
করোনাভাইরাসের কারণে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া, এমনকি একই এলাকায় সংগঠিত হওয়ার সুযোগ না থাকায় নিরাপত্তা বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী তৎপরতা কমার কথাই বলা হয়েছিল। লক্ষণীয় যে আইসিসের সংবাদপত্র আল নাবাতে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও তাদের আক্রমণ এবং যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। আইসিসের এই হুমকি একেবারেই কথার কথা নয়। কেননা তাদের ঘাঁটির পতন হলেও সিরিয়া ও ইরাকে তাদের প্রায় ২০ হাজার যোদ্ধা এখনো বিভিন্নভাবে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে এবং তারা ওই অঞ্চলে তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। আল নাবার ৯ এপ্রিল সংখ্যায় আইসিস দাবি করে যে আগের সপ্তাহে তাদের যোদ্ধারা ইরাকে ২৯টি হামলা চালিয়েছে, সিরিয়ায় ১১টি।
পূর্ব সিরিয়ার হোম প্রদেশের আল-সুকনাহ বলে একটি শহরে এপ্রিলের গোড়াতে আইসিস বড় ধরনের হামলা চালিয়ে ৩২ জন সিরীয় সৈন্যকে হত্যা করেছে বলেও দাবি করে। আরেক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল–কায়েদা এই সময়ে কোনো ধরনের হামলা চালানোর কথা বলেনি। আল–কায়েদার প্রচারণায় মুখ্য হয়ে উঠেছে তাদের প্রতি সহানুভূতি অর্জন এবং এই অবস্থায় তাদের সদস্যদের ভরণপোষণের বিষয়। যে কারণে তাদের প্রচারণায় সব ধরনের মানুষের দুর্ভোগের কথা বলা হচ্ছে এবং আল-কায়েদা ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন সংগঠন এবং অনুসারীদের আর্থিকভাবে সাহায্য করে।
তাদের এই কৌশলের কারণ তিনটি বলে ধারণা করা হয়। প্রথমত, আইসিসের হাতে যে পরিমাণ সম্পদ আছে, আল-কায়েদার হাতে তা নেই। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিসের হাতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার রয়েছে। দ্বিতীয়ত, সাংগঠনিকভাবে আল-কায়েদা এখন বড় হামলা চালানোর মতো সক্ষম নয়। তৃতীয়ত, আল–কায়েদা সাংগঠনিকভাবে ছোট ছোট আক্রমণের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদিভাবে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি অর্জনের প্রতিই এখন মনোযোগ দিয়েছে।
আরও
৩ ঘণ্টা, ২৩ মিনিট আগে
৩ ঘণ্টা, ২৫ মিনিট আগে
৭ ঘণ্টা, ৩১ মিনিট আগে
১১ ঘণ্টা, ৩৯ মিনিট আগে
১১ ঘণ্টা, ৪০ মিনিট আগে
১১ ঘণ্টা, ৪৭ মিনিট আগে
১১ ঘণ্টা, ৪৯ মিনিট আগে
১৩ ঘণ্টা, ১ মিনিট আগে
১৩ ঘণ্টা, ৩ মিনিট আগে
১৩ ঘণ্টা, ১৪ মিনিট আগে