২৭ বছরের ব্যবধানে দুই মৃত্যুর সূত্র যেখানে এক
সুশান্ত সিং রাজপুত মারা গেলেন ২০২০ সালে। ঠিক ২৭ বছর আগে বলিউডের সবচেয়ে রূপবতী নারী দিব্যা ভারতীয় মারা যান ১৯৯৩ সালে। এই দুজনের মৃত্যুর সঙ্গে একজন মানুষের নাম উঠে এসেছে- তিনি হলেন সাজিদ নাদিদওয়ালা। দিব্যা ভারতীয় ছিলেন সাজিদের স্ত্রী। আর সুশান্ত সিং এর অভিনয় করার কথা ছিল সাজিদের প্রযোজনায় সর্বশেষ ছবি। পরে সাজিদ নাকি তার প্রযোজনার সকল ছবি থেকে সুশান্তকে নিষিদ্ধ করেছিলেন।
অর্থাৎ অভিনেতা কমল আর খান যে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর যে ক'জনকে দায়ী হিসেবে নাম তুলেছিলেন তারমধ্যে একজন সাজিদ। সাজিদ বলিউডের নামী প্রযোজক। দিব্যা ভারতীয় ছিলেন তাঁর প্রথম স্ত্রী। রহস্যজনকভাবে বহুতল ভবনের জানালা থেকে পড়ে মারা যান। অথচ ঠিক মৃত্যুর দিন তিনি একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
নব্বইয়ের দশকের দিব্যা ভারতীর 'সাত সমুদ্র পার...' গান এখনও মানুষের মনে রয়েছে। মনে রয়েছে দিওয়ানা ছবির প্রত্যেকটি গানের কথা। দিব্যা ভারতীর সাথে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে সুযোগ তৈরি হয় শাহরুখের।
দিব্যা ভারতী এমন একজন অভিনেত্রী ছিলেন যিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তামিল সিনেমা ববি রাজায় কাজ করেন। এরপর তিনি আর পেছন ফিরে তাকাননি। সেই সময় শোলা অর শাবনাম, দিল আসান হে, দিওয়ানার মতো সুপারহিট সিনেমার মাধ্যমে সফলতা পেয়েছেন। কিন্তু মাত্র ১৯ বছর বয়সে রহস্যময়ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।
৫ এপ্রিল, ১৯৯৩ সালের রাতটি ছিল দিব্যা ভারতীর শেষ রাত। দিব্যার মৃত্যু মুম্বাইয়ের বারসোভার পাঁচ তলা বিল্ডিং থেকে পড়ে যাওয়ার ফলে হয়। কয়েকজন মনে করেন এটা আত্মহত্যা। আবার অনেকের মতে ষড়যন্ত্র করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে মুম্বাই পুলিশ এই ক্ষেত্রে প্রমাণ সংগ্রহ করতে সফল হননি। ১৯৯৮ সালে এই মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ ২৫ হলো কিনারা হয়নি এই মৃত্যুর।
যারা পুরো বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখেছিলেন তাদের মতে স্বামী সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার ওপর আঙুল তুলেছিল। আন্ডারওয়াল্ডের সাথে মামলাটি জুড়ে দেখা হচ্ছিল। যদিও অন্য তত্ত্ব হলো সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সাথে দিব্যার সম্পর্ক এবং ফিল্মে অপ্রত্যাশিত সাফল্য তাঁকে তাঁর মা-বাবার থেকে দূরে নিয়ে গিয়েছিল। এই কারণে তিনি হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করে নেন। দিব্যা ভারতীর মৃত্যুর বিষয়টি এখনও রহস্য।
দিব্যার স্বামী সাজিদের নাম ফের আরেকটি মৃত্যুর সুঙ্গে জড়ালো। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সাথে করণ জোহর, সালমান খান, আদিত্য চোপড়া, একতা কাপুরের পর যুক্ত হয়েছে সেই সাজিদের নাম। সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা। কেন এই নামটি বারবার আসছে?
জীবিত অবস্থায় ২০১৯-এ সুশান্তের শেষ ছবি মুক্তি পেয়েছে 'ছিছোড়ে'। সেটি শুধু সুশান্তের ক্যারিয়ারের অন্যতম হিট ছবিই না, সিনেমাটিও দর্শকের মনে বিশেষ ভাবে প্রভাব ফেলেছে এবং ভালোবাসা পেয়েছে। ২০১৯-এর সবচেয়ে প্রিয় ছবির মধ্যে অন্যতম ছিল এটি। এই ছবির প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াওয়ালা সুশান্তের সঙ্গে তাঁর আরও একটি নতুন ছবির কথা বলে ফেলেছিলেন। নতুন ছবির জন্য সাইনিং অ্যামাউন্টও দেওয়া হয়ে গিয়েছিল সুশান্তকে। বলিউড অভিনেতা, লেখক কামাল আর খানের ভাষ্যমতে সাজিদ সুশান্তকে পরে ব্যান করেছিলেন। যার ফলেই বলিউডে 'নেপোটিজম' শব্দটি জোড়ালোভাবেই নিয়ে আসেন কঙ্গনা রানাউত।