সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনায় দুর্বলতা কোথায়?
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের পাচার করা অর্থের ব্যাপারে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত কোন তথ্য নেই।
দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক বলেছে, গত বছর অর্থপাচার নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মুখে তথ্যের জন্য সুইজারল্যান্ড ব্যাংকের সাথে সমঝোতার উদ্যোগ নিতে দুদক সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু এক বছরেও অগ্রগতির কোন খবর মেলেনি।
সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার হওয়ার পর এর তথ্য জেনে বাংলাদেশে তা ফেরত আনার ক্ষেত্রে তৎপরতায় এখনও দুর্বলতা রয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবছর যে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে সেখানে ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ ৫হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। যা এর আগের বছর থেকে দেড়শ কোটি টাকা কমেছে।
কিন্তু সামান্য কমার এই ধারা সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার এবং সেই অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না থাকায় পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না।
"যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, এটার প্রবাহ বন্ধ করা এবং অর্থ ফিরিয়ে আনা-এই দু'টোর জন্যই যে ধরণের রাজনৈতিক এবং আইনি কাঠামো দরকার, সেটা আমাদের এখানে অনুপস্থিত রয়েছে।"
বিদেশের ব্যাংকে কাদের অর্থ, কীভাবে যায়?
বিদেশের ব্যাংকে জমা হওয়া এবং পাচার হওয়া অর্থের উৎস নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে।
ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, "যে অর্থ বিদেশে যায়, তার বেশিরভাগই অপ্রদর্শিত বা দুর্নীতির অর্থ। আরেকভাবে যায়, সেটা হচ্ছে, ব্যবসা বাণিজ্য বিশেষ করে আমদানি রপ্তানির মাধ্যমে। এসব উপায়ে যে টাকা চলে গেছে, সেটা কিন্তু সুইস ব্যাংক এবং গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির রিপোর্টেও দেখা যায়।"
গত বছরও সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা রাখার বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, যদিও সংশ্লিষ্ট আইনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্য কারও বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে তাদের দেখার ক্ষমতা নাই। এরপরও গত বছর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
এক বছরেও তিনি কোন অগ্রগতি জানতে পারেননি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেছেন, "আমরা গত বছরই বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখেছিলাম, ভারত যেমন একটা সমঝোতা স্মারক করেছে, যার মাধ্যমে তারা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের সাথে তথ্য বিনিময় করে থাকে। আমরাও বাংলাদেশ ব্যাংককে পত্র দিয়েছিলাম সুইস ব্যাংকের সাথে তথ্য বিনিময়ের সমঝোতা করার জন্য। আজকেও আমি আমার অফিসকে বলেছি যে, একটা রিমাইন্ডার দেন যে কী করলো তারা?"
তবে তথ্য জানার জন্য সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের সাথে সমঝোতার চেষ্টায় এক বছরেও যে কোন অগ্রগতি হয়নি, বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে সেই ধারণা পাওয়া যায়।
অর্থ পাচার বন্ধের জন্য গঠিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মো: রাজি হাসান বলেছেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশি যাদের টাকা জমা আছে, তাদের বেশিরভাগই বিদেশে থাকেন।
"এর আগেও আমরা সুইস ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে বা বিশ্লেষণ করে দেখেছি যে, ব্যক্তিগত যে অর্থ সেখানে জমা আছে, সেটাও কিন্তু যারা বিদেশে বা বাইরে আছেন, তাদের অর্থ। এটা নয় যে সব টাকাই মানি লন্ডারিং হয়ে গেছে। যাই হোক মেকানিজম যেগুলো করতে হয়, সেগুলো কিন্তু আমরা করছি।"
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.