লাদাখ সফরে ভারতীয় সেনাপ্রধান
চীনের সঙ্গে সীমান্তে চলমান ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যেই কাশ্মীরের লাদাখ সফরে এসেছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে।
মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে তিনি লাদাখে পৌছান বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সমূহের বরাত দিয়ে জানিয়েছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে। গত ১৫ জুন এই লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ২৩ ভারতীয় সেনা নিহত হয়।
লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিস্থিতি ও পরিকাঠামোর পর্যালোচনা করতেই ভারতীয় সেনাপ্রধানের এ সফর। দুই দিন ধরে সেখানকার সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি।
এরইমধ্যে লাদাখে প্রায় ১০ হাজার ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। পাহাড়ে যুদ্ধের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিখ, গোর্খা, ইন্দো টিবেট বর্ডার ফোর্সের ব্যাটেলিয়নকে অধিক সংখ্যায় মোতায়েন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র।
স্থানীয় স্তরে উত্তেজনা আরো বাড়তে পারে কিংবা ফের সংঘর্ষ হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই এসব ব্যবস্থা নিয়েছে দিল্লি। আর কী ব্যবস্থা নেয়া হবে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর সেনাপ্রধান তা ঠিক করবেন।
ডয়চে ভেলে -এর খবরে বলা হয়েছে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে লাদাখে সেনাদের আর কী কী সহায়তা দরকার, কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সংঘর্ষ হলে কী করা দরকার এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন সেনাপ্রধান। তিনি পুরো সামরিক ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখবেন। তারপর যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন। তাই দিল্লির কাছে এই সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে সোমবার ভারত-চীন লেফটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ে আলোচনা হয়। প্রায় ১১ ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিবারই সাত-আটটি বিষয় আলোচনায় তোলা হয়। চীনকে ম্যাপ দিয়ে বলা হয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দুই কিলোমিটারের মধ্যে বেইজিং প্রচুর নির্মাণকাজ করেছে। এটা তারা করতে পারে না। এগুলো ভেঙে দিতে হবে। চীনা বাহিনীকে ৪ মে-র আগের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে। অর্থাৎ, তারা যে এগিয়ে এসেছে, সেখান থেকে পিছু হটতে হবে। সেনা সমাবেশ কমাতে হবে।
সোমবারের বৈঠকেও বিষয়গুলো উঠেছিল। কিন্তু কোনো সমাধান মেলেনি। এই সামরিক পর্যায়ে আলোচনায় অবশ্য এমনিতেই খুব বেশিদূর যাওয়া যায় না। তবে এ থেকে কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনার ভিত তৈরি হয়।
সোমবারের বৈঠকে চীনা সেনাদের পিছু হটার কোনো ইঙ্গিত দেননি দেশটির কর্মকর্তারা। বরং তারা বারবার ভারতকে লাদাখে সামরিক উপস্থিতি কমাতে বলেছে।