করোনায় শেষ ৫০০ মৃত্যু মাত্র ১২ দিনে
একের পর এক মৃত্যু। করোনভাইরাসে সরকার ঘোষিত মৃত্যু দেড় হাজার ছাড়িয়েছে দেশে। এর মধ্যে এক হাজার জন মারা গেছেন গত ২৮ দিনে। যার মধ্যে শেষ ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ১২ দিনে। অথচ দেশে করোনা সংক্রমণের পর প্রথম ৫০০ মৃত্যু পার হতে লেগেছিল ৬৯দিন।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৮ মার্চ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটাই দেখা গেছে। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়মিত অনলাইন বুলেটিন জানিয়েছে, দেশে সব মিলে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৫০২ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৮ জন।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জন। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার নতুন রোগী যুক্ত হচ্ছে। এত মানুষের যথাযথ চিকিৎসা দিতে না পারায় মৃত্যু বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অনেক দেশের তুলনায় দেশে মৃত্যুহার এখনো কম আছে। দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এর ঠিক ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। প্রথম মৃত্যুর পরের ৬৯তম দিনে ৫০০ ছাড়ায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা।আর এরপর ১৬ দিনেই নতুন করে মারা যান ৫১১ জন।
গত মার্চে সব মিলে করোনায় মারা যান মাত্র ৫ জন।এপ্রিলে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৩ জনে।এরপর মে মাসে মারা যান ৪৮২ জন।জুনে এটি লাফিয়ে বাড়তে থাকে।জুনে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৮৫২ জন।
করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত তথ্য প্রদানকারী অনলাইন পোর্টাল ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, বিশ্বে একদিনে সাড়ে ৮ হাজার মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।তবে এটি কমে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারে নেমে এসেছে।অধিকাংশ দেশেই মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসছে।তবে বাংলাদেশে এখন বাড়ছে।করোনা শনাক্তের সংখ্যায় বিশ্বে ১৭তম অবস্থানে এখন বাংলাদেশ।আর মোট মৃত্যুর দিক থেকে বাংলাদেশে অবস্থান ৩০ নম্বরে।তবে দিনে নতুন মৃত্যুর হিসেবে ১৬ নম্বরে বাংলাদেশ।
রোগী বেড়ে যাওয়া, চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনা, রোগীর জন্য হাসপাতালে শয্যার অপ্রতুলতা, অক্সিজেন ঘাটতি এবং বয়স্ক ও অন্য রোগে আক্রান্তদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় মৃত্যু বাড়ছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে করোনায় মৃতের ৭৭ শতাংশ পুরুষ ও ২৩ শতাংশ নারী।তবে এর বাইরে দেশে করোনার উপসর্গ নিয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছে, যা সরকারি হিসাবে যুক্ত হয় না।
মৃত্যুর তথ্য বলছে, অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম বয়সীরা বেশি মারা যাচ্ছে বাংলাদেশে।ইউরোপে ৭০ শতাংশের বেশি মারা গেছে ৭০ বছরের বেশি বয়সীরা।ভারতেও মৃতদের প্রায় ৭৫ শতাংশ হচ্ছেন ৬০ বছরের বেশি বয়সী।কিন্তু দেশে করোনায় মৃত্যুর ৬১ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের কম।আর ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা মারা গেছে ৩৯ শতাংশ।