চাকরি ছেড়ে অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিয়ে মস্ত ভুল করেছি : চুমকি
যখন দেশের শোবিজ ওয়েব সিরিজ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত অভিমত প্রকাশ করছেন ঠিক সেই সময়ে টেলিভিশন অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকী বললেন, অভিনয়কে ক্যারিয়ার নিয়ে মস্ত বড় ভুল করেছেন। দেশের শোবিজের খণ্ডচিত্র তুলে ধরে তিনি তার অবস্থান ব্যখ্যা করেন। চুমকি নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন, চাকরি বাকরি ছেড়ে যেদিন "অভিনয়" কে পেশা হিসেবে নিলাম সেদিন জীবনের মস্ত বড় ভুলটা করলাম।
কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন।, সেই থেকে শুনতে হলো, কি ব্যাপার ওজন গেইন করছো কেন? (তখনও আমাকে মোটা লাগতো বুঝেন অবস্থা), একটু স্মার্ট হও বুঝলে (কারণ আমি সবসময়ই ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরি এবং কাজ ছাড়া মেকাপ করি না), ইস তোমার সাথে প্রাণ খুলে আড্ডা দেয়া যায় না (কোনও ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বুঝতাম না, এই বিষয়ে চরম অশিক্ষিত আমি), দাওয়াত দাও না আবার আড্ডাতেও আসো না (পরিবার এবং প্রফেশন আজও একটু আলাদা রাখার চেষ্টা করি), একটা সার্কেল মেইনটেইন করা উচিত তোমার বুঝলে (লে হালুয়া শিল্পীরও যে সার্কেল থাকে আমার মোটা মাথা তখনও বুঝতো না, এখনও বোঝে না), তোমাকে নিলে নাটক বিক্রি হয় না (অথচ আমার লেখা, আমার ডিরেকশনার কাজ শিল্পী তালিকা দেখে চ্যানেল আই আমার শেষ কাজটাতেও আমাকেই অভিনয় করতে বলেছিল, এত টাকা পারিশ্রমিক চুমকী আপা! কম নেয়া যায় না? (অনেকে তো কাজ করিয়ে টাকাও দেয় নাই) এইসব তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যেও চুমকি টিকে আছেন কারণ সম্পর্কে বলেন, অভিনয় আমার প্রফেশন.. সুতরাং ১০০ ভাগ সততা দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি আমি। সবসময়ই কাজের আগে স্ক্রিপ্ট পড়ে পরিচালক এবং নাট্যকারের সাথে কথা বলি। আজ পর্যন্ত যত পরিচালকের সাথে কাজ করেছি, কেউ বলতে পারবে না সময় নিয়ে ঝামেলা করেছি। পাতার পর পাতার সংলাপ ঠিক বলি তাই অনেক টেক নিতে হয়না কখনো।
যে কোনওপ্রকার কষ্টকর অভিনয়ও মনোযোগ দিয়ে করি। সম্মান দিই ইউনিট-এর ছোট থেকে বড় প্রত্যেকটি সদস্যকে। পর্দায় নিজের উপস্থিতি কম সম্পর্কে চুমকি বলেন, এতটা সময় গেছে, আমার বয়স বেড়েছে, তবু আগের চিন্তার মানুষগুলোর চিন্তাধারার পরিবর্তন আসেনি। অথচ আমার মানসিক দৃঢ়তা বেড়েছে। আমি সম্মান করি কিন্তু ছোট বড় নির্বিশেষে অনেকেই সম্মান করতে জানে না, তাই আমিও সবার সাথে কাজ করে অসম্মানিত হতে চাই না। লম্বা লম্বা লেকচার দিলেই কাজের জায়গা সম্মানিত হয় না। আগে সম্মানজনক পরিবেশ গড়ে তুলুন। একে অপরের পিছনে অহেতুক বদনাম না করার অভ্যাস গড়ুন। নিজেরা আগে ঠিক হই, যেখানে যাকে প্রয়োজন খাতিরের মানুষ বাদ দিয়ে সঠিক মানুষকে কাস্টিং করুন। যোগ্য শিল্পীকে যোগ্য সম্মানী দেয়া চেষ্টা করুন। তারপর লম্বা লম্বা লেকচার দিন। প্রয়োজনকে বাদ অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেই কী শিল্প বাঁচবে।