‘তবু এই কফিনটাই সম্বল। কফিনের ভেতরে থাকা ভাইয়ের লাশটা মা-বাবাকে দেখাতে পারবো না। এই কষ্ট সহ্য করার নয়। কী করেই বা লাশটা দেখাব। ভাইয়ের প্রিয় মুখখানাই তো নাই। মস্তকবিহীন লাশ নিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছি। কী নৃশংস ওরা। এভাবে হত্যা করতে পারল আমার ভাইকে? ফেরীতে পদ্মা পার হওয়ার সময় খবর এলো লাশের বাকি অংশ পাওয়া গেছে। আবার ফিরে যাওয়ার অবস্থা নেই। এক আত্মীয়কে ফোনে বলেছি ভাইয়ের লাশের বাকি অংশ পুলিশের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে গ্রামে আসতে। কিভাবে মা-বাবাকে এমন মর্মন্তুদ ঘটনা বলব।’
এমন করুণ অভিব্যক্তি মো. হোজায়ফার। তার ছোট ভাই হেলাল উদ্দিন (২৬) নৃশংস হত্যার শিকার হন। সোমবার অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে হেলালের মরদেহের কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত পাওয়া যায় দক্ষিণখান থানাধীন মুক্তিযোদ্ধা সড়কের ১০৯ নম্বর বাসা ও হাজি আব্দুস সালাম সড়কের সংযোগস্থলে কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি বস্তায়। ওই দিনই বিমানবন্দর থানাধীন ইশান কলোনীর বটতলা পানির পাম্পের সামনে ডাস্টবিনে মাথাহীন লাশের অপর অংশ পাওয়া যায়। ভাইয়ের মোবাইল বন্ধ পেয়ে নরসিংদী থেকে ঢাকায় দক্ষিণ খানের বাসায় খোঁজ নিতে যান হোজায়ফা। ফিঙ্গার প্রিন্ট থেকে ছবি পাওয়া, হাত-পায়ের আঙুল, জামা-কাপড় অন্যান্য আলামত দেখে সোমবার মধ্যরাতে ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন তিনি। এরপর মঙ্গলবার ময়নাতদন্তসহ অন্যান্য আইনি বিষয় শেষ করে মস্তকবিহীন লাশ নিয়েই অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের নেছারাবাদের দই হাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।
হোজায়ফা সমকালকে জানান, তার ভাই হেলাল উদ্দিনের দেড় বছর ধরে দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে বিকাশ ও নগদের এজেন্ট ছাড়াও ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা ছিল। সেখানে একটি মেসে থাকতেন হেলাল। সোমবার সকাল ৮টার দিকে হেলালের বোন জামাই জাহিদ হোজায়ফাকে ফোন করে বলেন, হেলালের রুমমেট আলামিনের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন, রোববার রাতে বাসায় ফেরেননি হেলাল। ওই দিন সকাল ৭টার দোকান খুলতে বাসা থেকে বের হয়ে যান হেলাল। এরপর থেকে তার চারটি মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। বোন জামাইয়ের কাছ থেকে ভাইয়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানতে পেরে নরসিংদীর কর্মস্থল থেকে সোমবার ঢাকায় আসেন হোজায়ফা। এরপর আশপাশের দোকানীদের কাছ থেকে হেলালের ব্যাপারে জানতে চান তিনি। তারা জানান, রোববার দুুপুুরের পর হেলালকে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট এলাকায় দেখা যায়নি। ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে সোমবার দুপুরে দক্ষিণ খান থানায় যান হোজায়ফা। এসময় থানার ডিউটি অফিসার তাকে জানান, দুই থানা এলাকায় লাশের খণ্ডিত অংশের খোঁজ মিলেছে। দ্রুত পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে দেখেন সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা রয়েছেন। তারা মস্তকবিহীন লাশের ওপরের অংশ থেকে দুই হাতের আঙুলের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার পর একটি ছবি বের করে তাকে দেখান। ওই ছবি দেখার পরই তার ভাইয়ের পরিচয় নিশ্চিত করেন তিনি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.