দুই শিশুর পর আরেকজনকে পাঁচতলা থেকে ফেলার চেষ্টা
শিশুটির চোখের সামনেই অন্য দুই শিশুকে পাঁচতলার উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাকেও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল পাশের ঘরের লোকটি। সে কারণে ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারছে না চার বছরের শিশু রজনী। ভারতের নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে রজনী সাউ। এক আত্মীয়ের হাত আঁকড়ে ধরে বসে থাকছে সে। ধীর গলায় সে জানায়, আমরা খেলছিলাম বারান্দায়। আমাকেও লোকটি মাথা ঝাঁকিয়ে ডাকল। আমি কাছে যেতেই আমাকে বারান্দা থেকে তুলে নীচে ফেলে দিতে যাচ্ছিল। বড়বাজারের ১১৩ নম্বর নেতাজি সুভাষ রোডের সেই পাঁচতলা বাড়ির বাসিন্দা রজনী। গত রবিবার সন্ধ্যায় যে পাঁচতলার বারান্দা থেকে নীচে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় ছয় বছর বয়সী বিশাল সাউ ও দেড় বছরের শিবম সাউ নামে দুই শিশুকে।
এ ঘটনায় মারা যায় শিবম। এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত শিবকুমার গুপ্তকে রাতেই গ্রেপ্তার করে বড়বাজার থানা। গতকাল সোমবার পুলিশ তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করলে বিচারক শিবকুমারকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। জানা গেছে, আদালতে তার হয়ে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি। গতকালই দেড় বছরের শিবমের ময়নাতদন্ত করা হয় এনআরএস হাসপাতালে। হাসপাতালে বসে শাড়ির আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে শিবমের মা সবিতাদেবীকে বলেন, আর কিছু চাই না। আমি শুধু বিচার চাই। পাশে বসে স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিতে দিতে স্বামী বিক্রম বলেন, এখনো ভাবতে পারছি না ওই ছোট্ট ছেলেটাকে কিভাবে ছুড়ে উপর থেকে ফেলে দিল লোকটা! বাচ্চা তো দুষ্টুমি করবেই। তাই বলে এমন করবে? লোকটির যেন কঠোর শাস্তি হয়। অভিযোগ উঠেছে, শিবম ও বিশালকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ায় পর রজনীকেও ছুড়ে ফেলে দিতে যায় অভিযুক্ত শিবকুমার।
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে শিবকুমারকে আটকান শিবমের মা সবিতাদেবী ও বিশালের বাবা বুধন সাউ। বুধন বলেন, ভাগ্যিস বিশাল উপর থেকে পড়ার সময় প্রথমে তারের উপরে পড়েছিল। সে কারণে মাটিতে পড়ার সময় ওর কম লেগেছে। তাই বিশাল বেঁচে যায়। তবে তার বাম পায়ের হাড়ে চিড় ধরেছে, মুখেও আঘাত লেগেছে। জানা গেছে, শিবকুমারের ঘরের সামনে বাচ্চারা খেলা করায় তিনি বিরক্ত বোধ করতেন। এর আগেও তিনি বাচ্চাদের ছুড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
- ট্যাগ:
- আন্তর্জাতিক
- অভিযোগ
- শিশু
- আতঙ্কিত
- ছাদ থেকে পড়ে
- ভারত