'অসত্য' তথ্য কন্টাক্ট ট্রেসিংকে জটিল করে তুলছে - কর্তৃপক্ষ
'কন্টাক্ট ট্রেসিং' বা রোগী কাদের সংস্পর্শে এসেছিলো তা চিহ্নিত করা করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার একটা অন্যতম উপায়। কিন্তু বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, রোগীদের অসহযোগীতার কারণে এই কাজটি তাদের পক্ষে জটিল হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর প্রথম লকডাউন করা হয়েছিলো মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে।
এরপর বিভিন্ন সময়ে ঢাকার টোলারবাগ, বাসাবোসহ আরও কয়েকটি এলাকায় করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়ার পর লকডাউন করা হয়েছিলো।
এরপর কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং বা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া রোগীদের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদেরও চিহ্নিত করে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো স্থানীয় ভাবে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায়।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলছেন, পজিটিভ হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনে রাখার কারণেই শিবচর ও টোলারবাগের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।
আটই মার্চ প্রথম রোগী শনাক্তের পর পরবর্তী এক সপ্তাহে ২৪১ জন বিদেশ ফেরত ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলো আইইডিসিআর। এর মধ্যে তখন আটজনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিলো।
তখন থেকেই বিশেষজ্ঞরা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছিলো।
বাংলাদেশে কিভাবে করা হয় কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং
মূলতঃ কোনো রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে পজিটিভ পাওয়া গেলে তার কাছে ফোন করে আইইডিসিআর তথ্য নিতো যে তিনি অসুস্থ বোধ করার পর কার কার সাথে তিনি মিশেছেন বা কাছাকাছি এসেছেন।
অর্থাৎ একজন আক্রান্ত হলে তার যতজন সংস্পর্শে আসে এবং সেখান থেকে কতজন এবং তাদের থেকে কতজন। এজন্য নির্ধারিত ফর্মুলা অনুযায়ী এটা বিশ্লেষণ করা হয়।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলছেন এপ্রিলের প্রথম থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং ঠিক ছিলো। মাঝখানে কয়েকদিন ঝামেলার পর এখন আবার ব্যাপকভাবে হচ্ছে।
"কিন্তু এখন যে জটিলতা তা হলো মানুষ যখন ল্যাব রেজাল্ট জানছে তখন পজিটিভ হলে হয়তো ফোন বন্ধ করে দিচ্ছে"।
তিনি জানান ২৬শে মার্চ সাধারণ ছুটির পর যে পজিটিভ লোক পাওয়া গেছে তারা অনেকে স্বীকারই করেননি যে তিনি বাইরে গেছেন বা বাইরে কতক্ষণ ছিলেন তা বলেননি।
"অসত্য বললে তো এটা বের করা অসম্ভব যে কারা তার সংস্পর্শে এসেছেন"।
মিস্টার আলমগীর বলেন প্রথম দিকে একজন আক্রান্ত হলে তার কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে ৬০/৭০ জন পর্যন্ত তারা বের করতে পেরেছেন।
"কিন্তু এখন আর কিছু মানুষ সত্য বলছেন না, ফলে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং জটিল পর্যায়ে আছে। আমরা স্মার্ট ফোন দিয়ে চেষ্টা করি কিন্তু বাংলাদেশের বিরাট জনগোষ্ঠীই স্মার্টফোন ব্যবহার করেনা। ফলে তার অবস্থানও নির্ণয় করা যায়না"।