বিশ্বের প্রচলিত সব ব্যবস্থাকে বড় রকমের ঝাঁকুনি দিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারী। এ ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলোও আমাদের কাছে প্রকটভাবে ধরা দিয়েছে। স্বাস্থ্য, অর্থ, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতিÑ সব কিছুই এক নাজুক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অর্থ। তাই এই খাত নিয়ে ভাবনাও বেশি। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য এটি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি, করোনা আমাদের সামনে পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকারের জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে। সময় এসেছে আর্থিক খাতের আমূল সংস্কারের। আর বর্তমান বিশ্বে এই আর্থিক খাত পরিচালনার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
আমাদের দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা মূলত ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার। এটি ব্রিটিশ সিস্টেমের ব্র্যাঞ্চ ব্যাংকিং। এই সিস্টেমে ব্যাংকের শাখা-প্রশাখাগুলো সব সম্পদ হেডকোয়ার্টার্সে এনে জমা করে। অর্থাৎ সারা দেশ থেকে সম্পদ সংগ্রহ করে শহর বা কেন্দ্রে এনে জমা করা হয়। সেখান থেকে পরে বিতরণ করা হয়। ঔপনিবেশিক শাসনের বৈশিষ্ট্যও এটাই- কলোনিগুলোর রক্ত শুষে ঔপনিবেশিক প্রভুর কাছে নিয়ে জমা করা। একে জমিদারি ব্যবস্থার মতোও বলা যেতে পারে। জমিদাররা যেমন কৃষকদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে পয়সা আদায় করে সরকারকে খাজনা দিত, এটাও তেমনি। যারা ব্যাংকে কাজ করেন তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করতে টার্গেট দিয়ে দেয়া হয়। তারা নানা কৌশলে সেই টার্গেট পূরণ করেন।
আমেরিকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা আবার অন্য ধরনের, সেটাকে বলা হয় ইউনিট ব্যাংকিং সিস্টেম। আমেরিকার ব্যাংকগুলো সব স্বাধীন। তাদের মধ্যে ইন্টারনাল লিয়াজোঁ রয়েছে, কিন্তু প্রতিটি ইউনিট স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। যখন তারা দেখে কোনো এলাকার ব্যাংক ভালো করতে পারছে না তখন সেটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। আর সে কারণেই আমেরিকায় দেউলিয়া ঘোষণার হার অনেক বেশি। আমেরিকার অর্থনীতির গতিশীলতা এখানেই। যে ব্যাংক মুনাফা করতে পারছে না সেটি বন্ধ করে দিতে তারা মুহূর্তকাল দেরি করে না। তারা যে এলাকায় ব্যাংক স্থাপন করতে যায় সেখানকার ভোগ বা অর্থ খরচের প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করে। আয়ের একটি স্বাভাবিক ক্রিয়া হলো খরচ। তারা খরচের খাতওয়ারি বিভাজন (ব্রেক আপ) দেখে। আমেরিকায় কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক নেই। আমরা ফেডারেল রিজার্ভ হিসেবে যাকে জানি সেটি কোনো সেন্ট্রাল ব্যাংক নয়।
আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হলেও এটি জমিদারের মতোই ভূমিকা পালন করছে। এখানে ঔপনিবেশিক ধাঁচের নির্বাহী আদেশ দিয়ে রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একেকটি আইন করছে, একেকটি নির্দেশনা জারি করছে, কিন্তু এগুলোর প্রভাব ও প্রকোপ (ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড ইনসিডেন্স) কী হবে তা বোঝার মতো সামর্থ্য তার নেই। তারা যে কর বসাচ্ছে, যেসব নির্দেশনা জারি করছে তার প্রভাব ও প্রকোপ বোঝার জন্য পাবলিক ফাইন্যান্স, মনিটরি ইকোনমিকসের জ্ঞান থাকা বড় বিষয়। আর সে কারণেই আমাদের দেশে আর্থিক খাতে বিশেষ করে ব্যাংকগুলোর অনিয়ম দূর হচ্ছে না।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.