ভোর থেকে মহাবিপদ সংকেত, ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

ইত্তেফাক প্রকাশিত: ২০ মে ২০২০, ০১:৪১

সুপার সাইক্লোন আম্ফান বঙ্গোপসাগরতটে পৌঁছে কিছুটা দুর্বল হলেও তার রুদ্রমূর্তি ও প্রলয় ক্ষমতা নিঃশেষ হয়নি। মঙ্গলবার শেষরাত থেকে তার প্রভাবে উপকূলবর্তী এলাকায় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত বহাল থাকলেও আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে মহাবিপত্সংকেত দেখাতে হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে এবং বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

সারাদেশে নৌচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে মানুষ। রাতে এই প্রতিবেদন লেখার সময় আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, আম্ফান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরো পড়ুন : আম্ফান মোকাবিলায় প্রস্তুতির সার্বক্ষণিক খবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ওয়াহিদুজ্জামান স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও চিত্র বিশ্লেষণ করে বলেন, বঙ্গোপসাগরের সাইক্লোনটি মঙ্গলবার রাতে তার প্রলয় গতি ও শক্তি হারিয়ে ক্যাটাগরি-৫ এর ‘সুপার সাইক্লোন’ থেকে ক্যাটাগরি-৪ এর অত্যন্ত শক্তিশালী সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। মূলত বিশাখাপত্তম অতিক্রম করার সময় এই অতিকায় সাইক্লোনের বর্ধিতাংশ ভূমির সংস্পর্শে এসে মেঘ হারিয়ে কিছুটা গতি এবং শক্তি ক্ষয় করেছে। ভূবনেশ্বরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আরো মেঘ হারায়। ফলে আরো গতি ও শক্তি হারিয়ে একটু দুর্বল হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী উপকূলে সাইক্লোনের প্রভাবে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হবে। আজ দুপুরের পর থেকে সেটা আরো তীব্র হবে। যদিও এটার কেন্দ্র বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অংশ দিয়ে ভূমিতে উঠে আসতে আজ বুধবার মধ্যরাত হয়ে যাবে। এরপর এটা স্থল নিম্নচাপ হিসেবে যশোর-ঝিনাইদহ এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার সারা দিন দেশের প্রায় সব জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান কিছুটা দুর্বল হতে শুরু করেছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আম্ফানের প্রভাব থাকবে। ভূমিতে চলে আসলে ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার শক্তিতে আমাদের উপকূল অঞ্চল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

মঙ্গলবার বিকালে সিএনএন টেলিভিশনে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল বেগে উপকূলীয় তটভূমিতে আঘাত করে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং সেখানে ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। ৩০ ফুট পর্যন্ত উচ্চ জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও রয়েছে। আলীপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী কোনো জায়গা দিয়ে স্থলভাগে ঢুকতে পারে ‘আম্ফান’। সে সময় তার যে ভয়াল রূপ ধারণ করার কথা, আবহাওয়া বিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকে বলা হয় ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোন’ বা মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়।’ আলীপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, বুধবার বিকাল বা সন্ধ্যায় দিঘা ও হাতিয়ার মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে আম্ফান। সারাদেশে নৌ চলাচল বন্ধ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় সারা দেশে ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান খাজা মিয়া বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশের পাঁচটি ফেরিঘাট দিয়ে কোনো ফেরি চলাচল করবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও