ট্রাক-অ্যাম্বুলেন্স-বাইকে করেও ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ
করোনা ভাইরাস রোধে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও রাজধানী থেকে নানা ধরনের যানবাহনে করে গ্রামে ফিরছেন মানুষ। ঝুঁকি নিয়ে মালবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, পিকআপভ্যান ও মোটরবাইকে করে দূর-দূরান্তের জেলায় বাড়ি ফিরছেন অনেকে। চেকপোস্টে পুলিশ তল্লাশি করলেও নানা বাহানা দেখিয়ে যাচ্ছে লোকজন। এতে করে গ্রামে করোনার ঝুঁকি বাড়ছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিনে শনিবার (১৬ মে) রাজধানীর কাওয়ানবাজার গিয়ে দেখা গেলো, যেসব ট্রাক রাতে রাজধানীতে সবজি ও মাছ নিয়ে আসে, সেই ফিরতি ট্রাকে করে গাদাগাদি করে গ্রামে যাচ্ছেন মানুষ। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ ও মধ্য অঞ্চলের মানুষ বেশি গ্রামে যাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বাসিন্দা ওবায়দুল হকও ট্রাকে করে গ্রামে ফিরছিলেন। ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে ফিরছেন এমন প্রশ্নের জবাবে এই যুবকের সোজাসাপ্টা জবাব, এই মৃত্যুপরীতে (ঢাকা) থাকার চেয়ে ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে ফেরাই ভালো। ৬০০ টাকা ভাড়ায় তিনি তাড়াশ যাচ্ছেন বলেও জানান। শুধু এ যুবক নয়, প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন এভাবে। রাজধানীর গাবতলী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোটরসাইকেল, পিকআপভ্যান ও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরিচা ঘাটে যাচ্ছেন কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, মেহেরপুরসহ খুলনা অঞ্চলের মানুষ। সেখান থেকে ঘাট পার হয়ে অন্য যানবাহনে গন্তব্যে ছুটছেন এসব লোকজন। আবার কেউ মোটরসাইকেলে করে সরাসরি চলে যাচ্ছেন। তবিবুল নামে এক তরুণ ছয়শ টাকা ভাড়ায় ঝিনাইদহে পিকআপভ্যানে বাড়ি ফিরছেন। গন্তব্য ভেদে এক হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে এসব যানবাহন। রিপন মিয়া নামে এক যাত্রী বলেন, তিনি আটশ টাকা ভাড়ায় মেহেরপুরের গাংনী যাচ্ছেন। ঠিক একইভাবে অনেকে গুলিস্তান থেকে মাওয়া ঘাটে যাচ্ছে পিকআপভ্যান, মোটরসাইকেল ও অ্যাম্বুলেন্সে করে। বিশেষ করে ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। ভাড়া গন্তব্য ভেদে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর গিয়ে দেখা যায়, দূর-দূরান্তের যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন মোটরসাইকেল চালকরা। সেখান থেকে রাজশাহী, নাটোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও রংপুর বিভাগেও যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে অনেকে। গন্তব্য ভেদে ভাড়া সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। ট্রাকে বসা যাত্রী রফিক মিয়া ব্যবসা করেন। চালকের সঙ্গে ৫০০ টাকার চুক্তি করে মানিকগঞ্জ যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ব্যবসার কাজে ঢাকা এসেছিলাম, বাড়িতে যাওয়া জরুরি তাই ট্রাকে যাচ্ছি। ঝুঁকি থাকলেও নিরুপায় হয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। ট্রাকচালক আজগর মিয়া বলেন, নাটোর থেকে কাঁচা সবজি নিয়ে ঢাকায় এসেছিলাম, ফেরার সময় মানুষ ভর্তি করে ফিরছি। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে ন্যূনতম তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও গাদাগাদি করে মানুষ গ্রামে যাচ্ছে।