প্রণোদনা বাস্তবায়নে নিজেদের ক্ষতির হিসাব কষছে ব্যাংকগুলো
করোনাভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত প্যাকেজ বাস্তবায়নে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নিজেদের ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব কষছে। অর্থ মন্ত্রণালয় গতকাল বৃস্পতিবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ মন্ত্রণালয়কে পাঠাতে বলেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভারচুয়াল বৈঠক থেকে এই বিবরণ পাঠাতে বলা হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশে বলেছে, প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে সতর্কতার সঙ্গে ঋণ দিতে হবে। গ্রাহকদের গুণগত মান যেন ভালো থাকে। তবে কৃষি খাতে অতটা কঠোর হওয়ার দরকার নেই। প্যাকেজ বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হলে তারা যেন মন্ত্রণালয়কে জানায়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামালসহ রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অংশ নেন। এ ছাড়া অংশ নেন কৃষি-কর্মসংস্থানসহ সরকারি ৬ ব্যাংক, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের এমডি। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এমডিরা সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্যাকেজ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি এই আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন যে, এই প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে গেলে তাদের আয় কমে যাবে। এমনকি পরিচালন ব্যয়ও বেড়ে যেতে পারে। বিভিন্ন খাতে সরকার প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ পাবে বড় শিল্প খাত। আর ২০ হাজার কোটি টাকা পাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত। ৯ শতাংশ সুদে হিসাব করা হলেও ঋণগ্রহীতাদের দিতে হবে গড়ে অর্ধেক সুদ। বাকি অর্থেক ভর্তুকি আকারে ব্যাংকগুলোকে সরকার দিয়ে দেবে। সূত্র জানায়, এমডিরা বৈঠকে জানিয়েছে, এই ঋণের জন্য এত আবেদন আসছে যে, ঘোষিত টাকায় তা কুলোবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জটিলতা এড়াতে কোন ব্যাংক কত ঋণ দিতে পারবে, সেই সীমা বেঁধে দেওয়া হতে পারে। কোনো কোনো এমডি ঋণের মূল টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস বাংলাদেশ (এবিবি) একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল।