শ্রমিক ধর্মঘটে অচল নৌরুট, ভোগান্তি

মানবজমিন প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৩২

১১ দফা দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা। আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে নদীবন্দর ও লঞ্চ টার্মিনালগুলো নৌযান শূন্য দেখা গেছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। লঞ্চ না পেয়ে অনেকে ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন। এদিকে ধর্মঘট ডকা ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট ৮টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক হুমায়ুন কবির।ঢাকা থেকে ছাড়লেও দেশের বিভিন্ন নদীবন্দর ও লঞ্চ টার্মিনালগুলো থেকে কোন নৌযান ছেড়ে যায়নি। আজ ভোর থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে কোনও গন্তব্যে ছেড়ে যায়নি স্থানীয় রুটের যাত্রীবাহী কোনও নৌযান। এসব নৌযান পল্টুন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নদী বন্দরে এসেও যেতে পারেননি যাত্রীরা। কয়েকদিন আগে বাস ধর্মঘট এবং সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই আবার নৌ ধর্মঘটে যাত্রীরা অতিষ্ঠ। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।বরিশাল: বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আঞ্চলিক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একিন আলী জানিয়েছেন, ‘দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি বন্ধ, নৌশ্রমিকদের খাদ্য ভাতা প্রদান, সরকার ঘোষিত গেজেট মোতাবেক বেতন প্রদান, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদান, নৌশ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মৃত্যুকালীন ভাতা ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ ১১দফা দাবিতে এই আন্দোলন শুরু করেছে নৌ শ্রমিকরা।বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নদীবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ ১০ রুটে ৩৩টি লঞ্চ প্রতিদিন যাতায়াত করে। আর রাজধানীর সঙ্গে যাতায়াত করে প্রতিদিন ১৪টি বিলাসবহুল লঞ্চ।এর আগে ২০১০, ২০১২, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে এই একই দাবিতে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন ও আন্দোলন করেছে শ্রমিকরা। আন্দোলনকারীদের ভাষায়, লঞ্চ মালিকরা তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা পালন না করায় বারবার কর্মবিরতি করতে হচ্ছে।নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশনের ১৪ দফা ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জে ধর্মঘট পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদীবন্দর নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সাতটি রুটে ৭০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে। তবে শনিবার গুটিকয়েক লঞ্চ চলাচল করতে দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। দীর্ঘসময় ধরে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে, দূরপাল্লার অনেক যাত্রীকে। পাশাপাশি হাতে গোনা দু’একটি বালুবাহী বাল্কহেড চলতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ বাল্কহেড ও তেলের ট্যাংকারসহ সহস্রাধিক পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।চাঁদপুর: নৌ ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে চাঁদপুর লঞ্চঘাট। রাত ১২টা থেকে চাঁদপুর থেকে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, শরীয়তপুরসহ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীসাধারণকে। যাত্রীরা লঞ্চ না পেয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বাসে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। লক্ষ্মীপুর থেকে আসা সাইফুল বলেন, আমি ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যাবো। কিন্তু চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এসে দেখি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। এখন কীভাবে যাবো বুঝতে পারছি না।’ কয়েকজন যাত্রী জানান, ঘাটে এসে দেখি কোনও লঞ্চ নেই। তাই এখন বাসে ঢাকায় যেতে হবে।মোংলা: নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মোংলা বন্দরে। শুক্রবার রাত থেকেই মোংলায় বন্ধ হয়ে গেছে নৌপথে পণ্য পরিবহণের কাজ। কর্মবিরতি শুরু আগ থেকে বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের কাছে যে সব নৌযান ছিল সেগুলোতে শনিবার সকালে স্বল্প পরিসরে পণ্য খালাসের কাজ চলে। কিন্তু দুপুরের পর থেকে তাও বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। অন্যান্য জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন বলেন, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির প্রভাব ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। সকালের পালায় জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ হলেও দুপুরের পর থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও