ক্যাসিনোতে স্বেচ্ছাসেবা পদচ্যুত মোল্লা কাওছার

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

মূল দলের পক্ষে গঠনমূলক কার্যক্রম চালানোর লক্ষ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের। এ নিয়ে কাজ করবেন নেতারা। কিন্তু আওয়ামী লীগের এ সহযোগী সংগঠনটির সভাপতি এডভোকেট মোল্লা আবু কাওছার স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন নিজের ভাগ্য গড়ার কাজে। তার স্বেচ্ছাশ্রমে চলেছে বেআইনি ক্যাসিনো। চাঁদা আদায়, টেন্ডারবাজির অর্থ ভাগাভাগির মতো গুরুতর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এমন সব অভিযোগ মাথায় নিয়ে পদচ্যুত হয়েছেন তিনি। গতকাল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মোল্লা কাওছারকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে এমন অভিযোগে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগ নেতাদের নাম আসার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন মোল্লা আবু কাওছার। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরুর আগেই তিনি বিদেশে চলে যান। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান কাওছার। কমিটির মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত কাউন্সিল করতে পারেনি মোল্লা কাওছারের নেতৃত্বাধীন কমিটি। ক্যাসিনো কাণ্ডে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো সমালোচনার মুখে পড়ায় অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ চারটি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। সে অনুযায়ী আগামী ১৬ই নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হওয়ার কথা। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরুর পর প্রথমে যাদের নাম প্রকাশ পায় তাদের অন্যতম মোল্লা কাওছার। তিনি মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সভাপতি। এ ক্লাবে ক্যাসিনা পরিচালনা করতেন মোল্লা কাওছার। এ ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনায় সহযোগিতা করতেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ। অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনায় তথ্য প্রকাশের পর মোল্লা কাওছারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চিঠিতে তাদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো টাকা উত্তোলন ও স্থানাস্তর না করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, মোল্লা কাওছার, তার স্ত্রী পারভীন লুনা, মেয়ে নুজহাত নাদিয়া নিলা এবং তাদের প্রতিষ্ঠান ফাইন পাওয়ার সলিউশন লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত থাকবে। গত ১৮ই সেপ্টেম্বর মতিঝিলের আরামবাগে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে প্রচুর মাদকদ্রব্য, ২০ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোট, ১০ লাখ ২৭ হাজার টাকা ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা ও টেন্ডার মুঘল জি কে শামীমের সঙ্গেও মোল্লা কাওছারের ঘনিষ্ঠতার তথ্য উঠে এসেছে। একচেটিয়া গণপূর্ত বিভাগের কাজের দরপত্র নিয়ন্ত্রণে জি কে শামীমকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আছে মোল্লা কাওছারের বিরুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের শীর্ষ কর্তকর্তা মোল্লা আবু কাওছারের সঙ্গে এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতেন জি কে শামীম। শামীম এসোসিয়েশনে ১০ লাখ টাকা অনুদানও দিয়েছিলেন। টেন্ডার মুঘল জিকে শামীম গ্রেপ্তারের পর টেন্ডারবাজির টাকার ভাগবাটোয়ারার যে তথ্য দেন তাতে মোল্লা কাওছারের নামও উঠে আসে। গত ২০শে সেপ্টেম্বর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় জি কে শামীম। এরপর রিমান্ড শেষে তাকে যখন আদালতে তোলা হয় তখন তিনি সেখানে এডভোকেট মোল্লা আবু কাওছারকে খুঁজছিলেন। ক্যাসিনো কাণ্ডে গ্রেপ্তার যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের বহিস্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের সঙ্গেও সখ্যতা ছিল মোল্লা আবু কাওছারের। এছাড়া যুবলীগের আরেক নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গ্রেপ্তারের পর জানিয়েছেন, ক্যাসিনোর আয় থেকে নিয়মিত মাসোহারা পেতেন মোল্লা কাওছার। এদিকে সংগঠন পরিচালনায়ও মোল্লা কাওছারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আছে। সংগঠনটির বতর্মান কমিটির অনেক নেতাই তার ওপর নাখোশ। তাদের দাবি সংগঠন পরিচালনা করার চেয়ে নিজে সুবিধা নেয়াকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন তিনি। এ কারণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত কাউন্সিল হচ্ছে না। পুরনো কমিটি দিয়েই চলছে কার্যক্রম। মোল্লা কাওছার সংগঠন পরিচালনা করতেন নিজস্ব বলয়ের লোকজনকে নিয়ে। এতে ত্যাগী অনেক নেতাকর্মী সংগঠনে কোণঠাসা হয়ে আছেন। অব্যাহতির পর এসব নেতারা মোল্লা কাওছারের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ প্রকাশ করছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও