
শর্ষে ক্ষেতে অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ। ছবি : শামছুল হক রিপন; প্রিয়.কম
হলুদ ফুলের বনে গো, হলুদ ফুলের বনে...
আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:৪৮
(প্রিয়.কম) পৌষের দ্বিতীয় পক্ষের বিদায়লগ্ন। মাটিতে দোলায়িত বিস্তীর্ণ শর্ষে ক্ষেত আর আদিগন্ত প্রসারিত ভালোলাগার পরশ। তনুমন শিহরিত প্রকৃতির এমন আহ্বান কার না মনে দোলা দেয়! ইচ্ছেরা ডানা মেলে বুঝি এমন স্নিগ্ধ সান্নিধ্যে। তা না হলে অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের কেনবা এমন পেখম মেলা?
পৌষের সকালের এমনই এক মোহময় ক্ষণে হলুদের নিমন্ত্রণে প্রিয়.কম-এর ক্যামেরার সঙ্গে অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের মিতালি ঘটেছিল হলদে-মোদিত ফুলবাসে। প্রকৃতির সে পরিবেশ বিরাজ করছিল রাজধানী ঢাকার বসিলায়। সেখানে হলুদের যেন বাঁধ ভেঙেছে। মৃদুমন্দ বাতাসে কুসুম কোমল রবির কিরণ। চারটি পাপড়ির একটি শর্ষে, গুটিকয়েক ফুলের এক বৃন্তে বসবাস। গত রাতের কুয়াশার বিন্দু তখনো উবে যায়নি পাপড়ি থেকে। শিশিরসিক্ত শর্ষে ফুলগুলো চেয়ে আছে আকাশপানে। ফুলে ফুলে দূর-দূরান্তের মৌমাছির গুঞ্জরণ।
হলুদ-লালের এমন মেলবন্ধন প্রসূনকে যেন মাতাল করে তোলে। ছবি : শামছুল হক রিপন; প্রিয়.কম
কপালে লাল টিপ, যেন শীত-ক্লান্ত সূর্যটি এসে ভর করেছে প্রসূনের কপালে। পরনে সিঁদুররাঙা শাড়ি আর একসময়ের ভিক্টোরিয়ান সমাজবিরোধী ‘ব্লাউজ’। হাতে একগোছা রঙিন কাচের চুড়ি। বাহুর উপর-নিচ নিক্বণ তোলে হঠাৎ হঠাৎ চুড়ির রিনিঝিনি। সে নিক্বণে চঞ্চল হয় মৌমাছিরাও। প্রসূনকে ভালোলাগায় মুগ্ধ করতে তারাও ঘটিয়ে চলে জায়গা-বদল। যেন বলে যায়, ‘অলি বারবার ফিরে যায়, বারবার ফিরে আসে, তবেই তো ফুল বিকাশে’।
প্রসূনের এমন স্নিগ্ধতাই বলে দেয় কী আবেশে তিনি মুগ্ধ। ছবি : শামছুল হক রিপন; প্রিয়.কম
প্রসূনের বেণী দুটিও যেন তার এলায়িত কালোমেঘা চুলে দোদুল দোল তোলে। পলকে পলকে যেখানে ভেসে ওঠে গ্রামীণ নারীর সুখী হাস্যোজ্জ্বল মুখ। নখে সোনালি নেইলপলিশ। শর্ষের রং যেন তাতে মিশে রয় অমলিন। প্রসূনের চিবুকের কালো তিলটিও যেন সেই তালে তোলে ঝিলিক।
সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে প্রসূনের চোখের রোদ চশমা। সেটি আলতো তুলতেই ঠোঁটের সঙ্গে চোখও হাসে তার। কিশোরীর চঞ্চলতার দেখাও মেলে সেখানে। আর? পায়ের তলায় শর্ষের কাঁচা-নরম বীজের সমাহার। ঝরেও যেন তারা চপলমতীর পায়ে দলিতমথিত হতে সমর্পিত।
কিন্তু শর্ষের হলুদ রং কেমন এমন দোলা দেয় অনুক্ষণ? এমন সান্নিধ্য মানে না কেন কোনো ভেদাভেদ?
প্রসূনের এমন হাস্যোজ্জ্বল মুখাবয়ব নিশ্চয় আপনার মনেও জাগিয়েছে প্রকৃতির জন্য ভালোবাসা। ছবি : শামছুল হক রিপন; প্রিয়.কম
মনোবিজ্ঞান বলে, মানুষের মনে যেসব রং সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, তার মধ্যে হলুদ অন্যতম। এর পক্ষে শাস্ত্রও ইতিবাচক রায় দেয়। সেখানে বলা হয়েছে, খাঁটি হলুদ মানুষের মনোলোক চাঙা করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। শুধু কি তাই! প্রাচীনকালে শরীর শুদ্ধতায় ব্যবহার করা হতো হলুদ রং। রাজা-বাদশাহ, রাজকুমার-রাজকুমারী-রানিদের তো নিত্যদিনের ব্যবহৃত সৌন্দর্যবর্ধক উপাদান ছিল কাঁচা হলুদ। যা আমাদের আধুনিক জীবনেও বিরাজিত।
পৌষ পেরিয়ে মাঘ। তারপরও কিন্তু ফিকে হয়ে যায়নি শর্ষের রং। তাহলে আর বসে কেন! প্রসূনের মতো নিজেকে হলুদের মাঝে রাঙিয়ে তুলতে শীতের আড়মোড়া ভেঙে ছুটে যান প্রকৃতির কাছে। যেখানে হলুদ ডাকছে আপনাকে হাতছানি দিয়ে।
প্রিয় বিনোদন/গোরা/আজাদ চৌধুরী