ছবি সংগৃহীত

নারীর গর্ভাবস্থার পূর্বের রক্তচাপ শিশুর লিঙ্গের পূর্বাভাস দিতে পারে

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৫:১১
আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৫:১১

গর্ভাবস্থার পূর্বের রক্তচাপ ছেলে বা মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনার সাথে সম্পর্কযুক্ত। মডেল :সাথি, ছবি: নূর, প্রিয়.কম।

(প্রিয়.কম) আপনি যদি গর্ভবতী নারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা আপনার গর্ভের শিশুটি ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে তা জানার জন্য উৎসুক থাকে, তাই না? আপনি কি জানেন আপনার গর্ভাবস্থার পূর্বের রক্ত চাপ দেখে আপনার অনাগত সন্তানের লিঙ্গ সম্পর্কে ধারণা করা যায়? হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলেও এটি আসলে সত্যি। নতুন একটি গবেষণায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে, শিশুর লিঙ্গ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব এমনকি তা কনসিভ করার পূর্বেই। এটি নতুন কোন ধারণা নয়, প্রাচীনকাল থেকেই গর্ভাবস্থার ক্ষুধার ধরণ থেকে শুরু করে প্রাচীন চাইনিজ লুনার চার্ট দেখেও শিশুর লিঙ্গ সম্পর্কে ধারণা করা হত। কিন্তু কানাডার বিজ্ঞানীগণ আবিষ্কার করেছেন যে, আরো সঠিক শারীরবৃত্তীয় চিহ্ন: রক্তচাপ এর দ্বারা শিশুর লিঙ্গ সম্পর্কে ধারণা করা যায়।

গবেষকেরা একটি জনগোষ্ঠীতে অনাগত সন্তান ছেলে না মেয়ে তার অনুপাত নিয়ে গবেষণা করেছিলেন তখন তারা আবিষ্কার করেন যে গর্ভধারণের ১ সপ্তাহ পূর্বেই তা নির্ধারণ করা যায়। একজন নারী ছেলে না মেয়ে গর্ভধারণ করবেন তার একটি ভালো নির্দেশক হচ্ছে তার উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপ। তারা জেনেছেন যে, উচ্চমাত্রার সিস্টোলিক রক্তচাপ থাকে যাদের তাদের ছেলে হয় এবং নিম্ন রক্তচাপের নারীদের মেয়ে সন্তান হয়।

পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, কীভাবে যুদ্ধের সময় এবং অন্যান্য চাপের ঘটনা যেমন- অর্থনৈতিক মন্দা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ স্থানীয় অঞ্চলের ছেলে বা মেয়ের জন্ম গ্রহণের অনুপাতের উপর প্রভাব ফেলে। যদিও এর কারণটি অপরিষ্কার রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীগণ সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, এ ধরনের সময়ে অনেক বেশি ছেলে শিশু জন্ম গ্রহণ করে কারণ এ সময়ে ভ্রূণ শক্তিশালী হতে হয় যাতে গর্ভাবস্থায় টিকে থাকতে পারে। এখনো গর্ভাবস্থার অনুপাত ৫০:৫০, যদিও প্রকৃত জন্মহার সামান্য পরিবর্তিত হয়।

নতুন গবেষণাটি হয় ডা. রবি রত্নাকরন এর নেতৃত্বে টরন্টোর মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে এবং এটি প্রকাশিত হয় আমেরিকান জার্নাল অফ হাইপারটেনশন এ। এতে ১,৪১১ জন নারী সংযুক্ত হন যারা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করেছিলেন। তাদের  গর্ভধারণের ২৬ সপ্তাহ পূর্বেই তাদের পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই নারীদের গর্ভধারণের ফলে ৭৩৯ ছেলে এবং ৬৭২ মেয়ে জন্মগ্রহণ করে।

বয়স, শিক্ষা, ধূমপান, বডি মাস ইনডেক্স, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং গ্লুকোজ ইত্যাদি বিষয়গুলো সমন্বয় করার পরে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায় যে, ২৬ সপ্তাহের মধ্যে যে নারীদের সিস্টোলিক রক্তচাপ বেশি থাকে তারা ছেলে শিশুর জন্ম দেয় এবং নিম্ন রক্তচাপ ছিল যে নারীদের তারা মেয়ে শিশুর জন্ম দেয়।

‘এতে প্রস্তাব দেয়া হয় যে, গর্ভাবস্থার পূর্বের রক্তচাপ যা একটি অজানা ফ্যাক্টর তা ছেলে বা মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনার সাথে সম্পর্কযুক্ত’। রত্নাকরন একটি বিবৃতিতে ঘোষণা করেন যে, প্রজনন পরিকল্পনা এবং মৌলিক প্রক্রিয়া উভয়েই মানুষের লিঙ্গের অনুপাতের উপর প্রভাব বিস্তার করে।

সূত্র: আই এফ এল সায়েন্স

সম্পাদনা: কে এন দেয়া