কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমরা এমন কিছু খাবার খেয়ে থাকি যা অন্য সময় সাধারণত খাই না। যেমন গরু-খাসির কলিজা, পায়া, ভুঁড়ি, মগজ, ঝুরা মাংস ইত্যাদি। এসব খাবারকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মনে করা হয়। তবে এ খাবারগুলোর কিছু উপকারও আছে। এটা নির্ভর করে আপনি কী পরিমাণে ও কীভাবে খাচ্ছেন।
গরুর কলিজা
গরুর কলিজা আয়রনের খুব ভালো উৎস। রক্তস্বল্পতা রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন বি১২ ও রিবোফ্লাভিনেরও অন্যতম উৎস। তবে কোলেস্টেরলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় হৃদ্রোগ, ফ্যাটিলিভার, রক্তে কোলেস্টেরল, গাউট ও ডায়াবেটিসের রোগীদের কলিজা এড়িয়ে চলতে হবে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। স্কুলগামী শিশু, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য গরুর কলিজা উপকারী। তবে মাসে দুবারের বেশি না খাওয়া ভালো।
পায়া
অনেকের ধারণা, গরু বা খাসির পায়ায় অনেক ক্যালসিয়াম থাকে, যা ভুল ধারণা। পায়ার খাবার উপযোগী অংশের বেশির ভাগই ফ্যাট। তাই এটি খেতে সতর্কতা জরুরি। ফ্যাটিলিভার, হাইপার কোলেস্ট্রেমিয়া, হাইপার টেনশন, হৃদ্রোগ থাকলে পায়া না খাওয়া ভালো। একজন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তি মাসে দু-একবার গরুর পায়া খেতে পারেন।
মগজ
গরুর মগজ প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ও বি৬–এর ভালো উৎস। আয়রন ও পটাসিয়াম এবং কিছু ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও পাওয়া যায়। গরুর মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণও বেশি। তাই হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন ও হাইপারকোলেস্টেরলের রোগীর জন্য মগজ ভালো নয়। সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তি প্রতি দুই মাসে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম মগজ খেতে পারেন।
ভুঁড়ি
অন্যান্য অর্গান মিট অপেক্ষা গরুর ভুঁড়ি খাওয়া কিন্তু বেশ নিরাপদ। ভুঁড়ি প্রোটিনের ভালো উৎস। গরুর ভুঁড়িতে প্রোটিন, ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকে। এ ছাড়া গরুর ভুঁড়ি পটাশিয়ামের ভালো উৎস। ভুঁড়ির অন্যতম উপাদান কোলাজেন ত্বকের সুরক্ষা দেয়। ফ্যাটের পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকায় একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আবার ভুঁড়ি রান্নার সময় ভোজ্যতেলের ব্যবহার অনেক বেশি হয়। ইউরিক অ্যাসিড ও কিডনির রোগীরা ভুঁড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।