বিষধর গোখরা। ছবি- দ্বীপ বিশ্বাস

সাপের খামারে দেখে আসুন বিষধর গোখরা !!!

আফসানা সুমী
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:০৫
আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:০৫

(প্রিয়.কম) সাপের খামার! উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই পশুপাখীদের বিশেষায়িত খামার এবং গবেষনাগারের প্রচলন থাকলেও বাংলাদেশে এমন উদ্যোগ দেখা যায় না বলতে গেলে! সরকারি-বেসরকারি পর্যাপ্ত উদ্যোগের অভাবে প্রায়ই বিপদে পড়ে প্রাণীরা। বন কেটে আমরা গড়ি লোকালয়, আর বন্যেরা কাছে এলে মেরেই ফেলি প্রায়শ। সাপসহ অনেক প্রাণী মানুষের হিংস্রতায় প্রাণ হারায়! অথচ এই পৃথিবী ওদেরও! 

বিষাক্ত প্রাণী হওয়ায় সাপ কখনোই রক্ষা পায়নি মানুষের হাত থেকে। প্রাণীটি আক্রমণ না করলে কামড়ায় না কখনো। এঁকে ধরে বনে ছেড়ে না দিয়ে মেরে ফেলাই যেন একমাত্র পন্থা। সাপেদের রক্ষায় ব্যক্তি উদ্যোগে এবার গড়ে উঠছে খামার! পড়ুন দ্বীপ বিশ্বাসের লেখনীতে-

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কাঁসাদহ গ্রামে ২০ জন যুবক মিলে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে উদ্ধার করা বিষধর গোখরা নিয়ে সাপের খামার গড়ে তুলেছেন। মূল উদ্যোক্তা হলেন মো. রবিউল ইসলাম রঞ্জু মল্লিক।

বর্তমানে এই খামারটিতে ৬ থেকে ৮ প্রজাতির ৭০/৮০টি বিষধর গোখরা সাপ রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির সাপের মধ্যে বিষাক্ত গোখরা,খইয়া গোখরা,রাজ গোখরা,অজগর সহ বিভিন্ন ধরনের সাপ রয়েছে।কয়েকটি সাপ ইতোমধ্যে ডিমও দিয়েছে। সাপগুলোকে প্লাস্টিকের খাঁচা ও ১৫টি হাউজের মধ্যে পালন করা হচ্ছে।

সাপের খামারসাপ হত্যা করে জীববৈচিত্র ধ্বংস আর নয়! ছবি- দ্বীপ বিশ্বাস

রন্জু ভাই এর সাথে কথা বলে জানতে পারি, তিনি ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতে জৈব সার ও সাপের খামারের কিছু তথ্য পান। পরে রন্জু ভাই যোগাযোগ করেন ঝিনাইদহের জৈব সার খামারি হেলাল উদ্দিন এবং পটুয়াখালীর সাপের খামারি আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে। হেলাল উদ্দিনের পরামর্শ অনুযায়ী দেশের খ্যাতিমান কৃষিবিজ্ঞানী এম গুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে গড়ে তুলেছেন এই সাপের খামার।

এলাকাবাসী প্রথমে তাকে পাগল বলে আখ্যায়িত করলেও এখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এলাকায় এখন আর কেউ সাপ মারে না। কারো বাড়িতে সাপ ধরা পড়লে রন্জু ভাইকে খবর দেয়। তখন রন্জু ভাই তার লোকজন নিয়ে গিয়ে সাপটি উদ্ধার করে খামারে নিয়ে আসে। খামারের সাপগুলোকে সপ্তাহে একদিন করে ছোট মুরগীর বাচ্চা ও ক্ষেতে খামারে পাওয়া দেশী ইঁদুর খাওয়ানো হয়। ৭ দিনে দুই বার গোসল করাতে হয়। একদিন সাপের খাঁচা ও ঘর পরিস্কার করতে হয়। সাপ ধরতে ও পালন করতে লাঠি, টং, হাত মোজা, গ্লাভস, পায়ে বড় বুট ব্যবহার করতে হয়।

প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খামার উন্মুক্ত করা হয়।

যেভাবে যাবেন:-

ঢাকা থেকে পাংশা যায় এমন বাসে উঠে (গাবতলী থেকে হানিফ পরিবহন,রোজিনা পরিবহন,লালন পরিবহন) কালুখালী বাংলাদেশ হাট নামক জায়গায় নামতে হবে। সেখান থেকে ৪ কি.মি দূরে সাপের খামার।ভ্যান অথবা ব্যাটারী চালিত ইজি বাইকে এর চালককে সাপের খামার বললেই নিয়ে যাবে।

সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান।

ভ্রমণ সম্পর্কিত আরো তথ্য জানতে চোখ রাখুন আমাদের প্রিয় ট্রাভেলের ফেসবুক পাতায়। ভ্রমণ সম্পর্কিত যে কোনো লেখা দিয়ে জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা ৩ দিন ২ রাত ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগ। আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।