ছবি সংগৃহীত

প্রিয় গন্তব্য: নুহাশ পল্লী, হুমায়ুন আহমেদের স্মৃতি বিজড়িত স্থান

খন্দকার ইশতিয়াক মাহমুদ
লেখক
প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৯:০৬
আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৯:০৬

গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে আছে জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এর সমাধি। ছবি: সংগৃহীত।
 
(প্রিয়.কম): নুহাশ পল্লী নামটা পরিচিত আমাদের অনেকের কাছেই। বাংলাদেশের কালজয়ী কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ তার বিভিন্ন নাটক এবং সিনেমার প্রোডাকশনে নিজের গড়ে তোলা এই এলাকাটি ব্যবহার করেছেন।মারা যাবার পরে তাকে এখানেই দাফন করা হয়। তার সমাধিস্থলে রোজ ভিড় করেন গুণমুগ্ধ ভক্তরা।
 
কোথায়: গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হোতা-পাড়া বাজার। সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পিরুজ-আলী গ্রাম অবস্থিত। নুহাশ পল্লী গাজীপুরের পিরুজ-আলী গ্রামে অবস্থিত। এই গ্রামটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্রাম বলে প্রসিদ্ধ।
 
খোলা সবুজ প্রান্তর আর সাজানো গোছানো ছায়া দেয়া গাছ নিয়ে নুহাশ পল্লীর একাংশ। ছবি: মামুনূর রশীদ।
 
কীভাবে: আপনি পুরানো ঢাকা থেকে যেতে চাইলে গুলিস্তান থেকে ঢাকা পরিবহনের বাস যেটা কাপাসিয়া যায় এবং প্রভাতী বনশ্রীর বাস যেটা বরমী যায় সেটাতে উঠতে পারেন। মহাখালী থেকে আসতে চাইলে সম্রাট লাইন , রাজদূত পরিবহন, ডাউন টাউন, বাসে উঠতে পারেন। এবার আপনি হোতা-পাড়া নামক স্থানে নেমে সিএনজি বা লেগুনা বা যান্ত্রিক রিক্সায় নুহাশ পল্লীতে যেতে পারবেন। এছাড়াও ঢাকা থেকে কার বা মাইক্রো-বাস ভাড়া করেও যেতে পারেন আপনি।
 
কী দেখবেন: প্রয়াত কালজয়ী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ঢাকার অদূরে গাজীপুরে প্রতিষ্ঠা করেছেন এই প্রাকৃতিক নিসর্গ নুহাশ পল্লী। মূলত তার নিজের জন্য বানালেও পরে এই জায়গাটি তার বিভিন্ন টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রের শুটিং এর কাজে ব্যবহার করেছেন। 
 
গাজীপুরের ভেতরে নুহাশ পল্লী ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি। একদম জঙ্গলের ভিতরে হঠাৎ করে এক টুকরো পরিচ্ছন্ন উদ্যান, শান্ত সৌম্য পরিবেশ তার। গাছপালায় ঢাকা শ্যামল পরিবেশে সাধারণ গাছের পাশাপাশি এখানে ২৫০ প্রজাতির দুর্লভ ঔষধি, মসলা জাতীয়, ফলজ ও বনজ গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছের গায়ে সেটে দেয়া আছে পরিচিতি ফলক, যা দেখে গাছ চেনা যাবে সহজেই। সবুজ মাঠের মাঝখানে একটি বড় গাছের উপর ছোট ছোট ঘর তৈরি করা হয়েছে। উদ্যানের পূর্ব দিকে রয়েছে খেজুর বাগান। বাগানের এক পাশে “বৃষ্টি বিলাস” নামে আধুনিক বাংলো-বাড়ি আছে। নুহাশ পল্লীর আরেক আকর্ষণ “লীলাবতী দীঘি”। দীঘির চারপাশ জুড়ে নানা রকমের গাছ। রয়েছে বাধানো পুকুর ঘাট, পুকুরের মাঝখানে একটি দ্বীপ। সেখানে অনেকগুলো নারকেল গাছ।
 
বিকেলের মনোরম আলোয় নুহাশ পল্লী। ছবি: জাহিদ হাসান শুভ।
 
এছাড়া এখানে দেখা মিলবে হুমায়ূন আহমেদের আবক্ষ মূর্তি ও সমাধিস্থল, পদ্ম-পুকুর, সরোবরে পাথরের মৎস্য কন্যা, প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের মূর্তি, প্রাকৃতিক নকশায় তৈরি করা সুইমিং পুল যেখানে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুমায়ূন আহমেদ একসঙ্গে জলে নেমেছিলেন, দাবার গুটির প্রতিকৃতি, টি-হাউসসহ নানা রকম দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপত্য। ভূত বিলাস, বৃষ্টি-বিলাসসহ তিনটি বাংলো রয়েছে এই বাগানবাড়িটিতে।
 
নুহাশ পল্লীতে না ঢুকেও একটু বাম পাশ দিয়ে যে সরু রাস্তা গেছে, সেদিক দিয়ে আপনি হুমায়ুন আহমেদ এর কবর জিয়ারত করে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসতে পারেন। 
 
এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নুহাশ পল্লী সকল দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন খোলা থাকে। বয়স ১২ বছরের উপরে হলে জনপ্রতি টিকেট লাগবে ২০০ টাকা। কিন্তু নভেম্বর থেকে মার্চ মূলত পিকনিকের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। প্রতিদিন পিকনিকের জন্য ১টি গ্রুপে সর্বোচ্চ ৩০০ জন আসতে পারবে। সরকারি ছুটির দিনে পিকনিকের জন্য গুনতে হবে ৬০ হাজার টাকা, অন্যদিন ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনে পিকনিকের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাড়া পড়বে ৫০ হাজার টাকা, অন্যদিন গুলোতে ভাড়া হবে ৪০ হাজার টাকা।
 
প্রিয় ট্রাভেল/ সম্পাদনা ড. জিনিয়া রহমান।
 
আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।