
ছবি সংগৃহীত
হাজার বাগানের হাজারীবাগ এখন সবুজশূন্য- দৈনিক সমকাল
আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২১:২৯
ছবি: সমকাল
(প্রিয়.কম) জনশ্রুতি রয়েছে, হাজার বাগান থেকেই নামকরণ হয়েছিল রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার। সেসব বাগানের ছিটেফোঁটাও এখন আর নেই। সেসব বাগান নিশ্চিহ্ন হয়ে এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে কেবলই ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তথা ইট-কংক্রিটের জঞ্জাল। সরু অলিগলিতে ভরা ঘিঞ্জি হাজারীবাগ এলাকার বেশিরভাগ ভবনে একই সঙ্গে চলে বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও মানুষের বসবাস।
২৭ ফেব্রুয়ারি সোমাবর ‘হাজার বাগানের হাজারীবাগ এখন সবুজশূন্য’ শিরোনামে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এলাকাবাসীর সমস্যাও কম নয়। গত পাঁচ-ছয় বছরের ব্যবধানে সেখানকার এবড়োখেবড়ো রাস্তাগুলোর চেহারা কিছুটা ভালো হলেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অনেকটাই দুর্বল। ট্যানারির কারণে পচা চামড়া ও পশুবর্জ্যের উৎকট দুর্গন্ধ দীর্ঘদিনের অভ্যাসে হাজারীবাগবাসীর কাছে সহনীয় হয়ে পড়েছে। কিন্তু নবাগতদের কাছে তা এক দুঃসহ যন্ত্রণা। দুর্গন্ধে পুরো হাজারীবাগের বাতাস সব সময় ভারি থাকে। তার ওপর যোগ হয়েছে বেড়িবাঁধের বেহাল সড়ক। এ সড়কে চলতে গেলে যাত্রীদের অনেক কষ্টে বমি আটকে রাখতে হয়। বেড়িবাঁধ থেকে হাজারীবাগ এলাকায় প্রবেশপথগুলো একেবারেই সংকীর্ণ। পুরো থানায় কোনো খেলার মাঠ নেই। একটি মাত্র পার্ক থাকলেও সেটাকে এখন পার্ক বলার কোনো উপায় নেই। সেখানটা কেবলই ধুলোবালিতে পূর্ণ। এরই মধ্যে শিশু-কিশোররা ক্রিকেট ব্যাট-বল, ফুটবল নিয়ে দাপিয়ে বেড়ায়। এমনই অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে রাজধানীর পুরান ঢাকার হাজারীবাগ এলাকাবাসীর দিনযাপন।
হাজারীবাগের কুলীনমহল এলাকার বাসিন্দা ও বেড়িবাঁধসংলগ্ন রশিদ মার্কেটের জিতু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের স্বত্বাধিকারী নান্নু মিয়া সমকালের কাছে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাজারীবাগে প্রবেশ ও প্রস্থানের অবস্থা দুটোই খারাপ। বেড়িবাঁধ থেকে হাজারীবাগ এলাকায় প্রবেশের একমাত্র সড়ক হাজারীবাগ সড়কটিতে দুটি যানবাহন কোনোরকমে পাশাপাশি চলতে পারে। বাকিগুলোর কোনোটাতে সে উপায় নেই। তবে এ রাস্তাও খুব ভালো বলা যায় না। আজিমপুর কবরস্থান থেকে হাজারীবাগের নবাবগঞ্জ মোড় পর্যন্ত সড়কে দুটি রিকশা পাশাপাশি চলতে গেলে একটির সঙ্গে আরেকটি লেগে যায়। কোনো কারণে রিকশা থামিয়ে যাত্রী তুলতে গেলে বা যাত্রী নামাতে গেলেই পেছনে শ'খানেক রিকশা-টেম্পোর সারি তৈরি হয়। এ জন্য কিছু স্বেচ্ছাসেবক লাঠি নিয়ে এ সড়কে সব সময় যানবাহনের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারপরও জট অনিবার্য।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ট্যানারি ব্যবসার সুবিধাভোগীরা বরাবরই এখান থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের বিপক্ষে। অন্যরা চান, ট্যানারি চলে যাক। এলাকার পরিবেশ সুন্দর হোক। ট্যানারির কারণে হাজারীবাগের জীবনমানের উন্নয়ন হয়নি। এলাকায় একসময় বিপুলসংখ্যক বিত্তশালী থাকলেও তারা নতুন ঢাকায় বসবাস শুরু করেছেন।
প্রিয় সংবাদ/খোরশেদ
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- চামড়া শিল্প
- হাজারীবাগ