কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রতীকী ছবি

ফোনে বন্ধুকে বললেন স্মার্টওয়াচের কথা, অনলাইনে বিজ্ঞাপন এসে হাজির!

রাকিবুল হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০১৯, ১৬:০৮
আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯, ১৬:০৮

(প্রিয়.কম) মোবাইলে কল করে আপনি আপনার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছেন। কথা বলার সময় আপনার নতুন স্মার্টওয়াচটি কেনার কথা জানালেন আপনার বন্ধুকে। কথা বলা শেষে ফেসবুক চালানোর সময় আপনার নিউজ ফিডে দেখতে পেলেন স্মার্টওয়াচের বিজ্ঞাপন।

মাথায় প্রশ্ন আসতে পারে, হাতে থাকা স্মার্টফোনটি কি আপনার কথা গোপনে শুনছে? বা মোবাইলটিতে ইনস্টল থাকা কোনো অ্যাপ আপনার ওপর নজরদারি চালাচ্ছে?

এমন প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞরা জানান, কারিগরিভাবে এটি সম্ভব। হাতে থাকা স্মার্টফোন বা সেখানে থাকা অ্যাপ গোপনে আপনার কথা রেকর্ড করতে পারে। শুধু বিশেষজ্ঞরা নয়, অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীই এটি বিশ্বাস করেন।

এমন বিশ্বাসের উদাহরণ মেলে সম্প্রতি শেষ হওয়া এক জরিপে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এক হাজার ৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিনিদের ওপর জরিপ চালান গবেষকরা।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪৩ শতাংশই জানিয়েছেন, তারা বিশ্বাস করেন তাদের অনুমতি ছাড়া হাতে থাকা স্মার্টফোনগুলো তাদের কথা রেকর্ড করছে। তবে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, কথা রেকর্ড করা ছাড়াই একজন ব্যক্তি সম্পর্কে জানার দক্ষ উপায় রয়েছে।

২০১৭-১৮ সালে এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চালায় নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ডেভিড ছফেন্স-এর নেতৃত্বাধীন একটি গবেষক দল। স্মার্টফোনে থাকা অ্যাপগুলো মানুষের গোপন কথা রেকর্ড করে কিনা তা জানা তাদের লক্ষ্য ছিল।

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা যায়, এমন জনপ্রিয় ১৭ হাজার অ্যাপের ওপর তারা গবেষণা চালান। তবে এমন কোনো প্রমাণ পাননি, যেখানে ওই অ্যাপগুলো মাইক্রোফোন চালু করে দেয় বা অডিওগুলো অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেয়।

শুধু ছফেন্সের দল নয়, এই বিষয়টি নিয়ে আগেও কাজ করেছেন মোবাইল নিরাপত্তা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ওনডেরার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল কোভিংটন। ছফেন্স ও কোভিংটন-এর গবেষণার ফলাফল কাছাকাছিই ছিল। অর্থাৎ তারা গোপনভাবে রেকর্ডিং করার কোনো প্রমাণ পাননি।

ছফেন্সের মতে, বড় পরিসরে কথা রেকর্ডিং, সেগুলো ভাষান্তর থেকে শুরু করে বিশ্লেষণ পর্যন্ত যে ধাপ রয়েছে, এতে প্রয়োজন প্রচুর কম্পিউটিং ক্ষমতা। তার ধারণা এসবের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হ্যাকাররা জড়িত।

মাইক্রোফোন দিয়ে না হলে কীভাবে ঘটে এটি?

গুগল থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রাহকদের থেকে নাম, জন্মতারিখ, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য নিয়ে থাকে। এর মধ্যে কিছু অ্যাপ জিপিএস ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর অবস্থান শনাক্ত করে থাকে। যেমন ব্যবহারকারী যেসব বিষয় ব্রাউজ করছে, তা মনিটর করে ফেসবুক।

ছফেন্সের গবেষণা ফলাফলে দেখা যায়, ৯ হাজার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ রয়েছে যেগুলো গোপনভাবে ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনের স্ক্রিনের স্ক্রিনশট নিয়ে থাকে।

একটি ফুড ডেলিভারি অ্যাপকে পাওয়া গেছে যেটি ব্যবহারকারী তার স্মার্টফোন কি করছেন তা ভিডিও আকারে রেকর্ড করে। এসব ছবি বা ভিডিও আপনাআপনি চলে যায় তৃতীয় পক্ষের কাছে। এসব তৃতীয় পক্ষ ওই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে থাকে।

গবেষকদের ধারণা, যখন কেউ এসব অ্যাপ ব্যবহার করে বা স্মার্টফোন ব্যবহার করে মেসেজের মাধ্যমে নতুন স্মার্টওয়াচ কেনার কথা বলছেন তখন তার তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব বিজ্ঞাপন ভাসছে তাদের সামনে। আবার কেউ যখন ওই স্মার্টওয়াচের দোকানে গিয়ে স্মার্টওয়াচ কিনছেন তখন জিপিএস’র মাধ্যমে তিনি ট্র্যাক হচ্ছেন। ফলে সয়ংক্রিয়ভাবে দেখতে পাচ্ছেন ওই স্মার্টওয়াচের বিজ্ঞাপন। ব্রাউজার বা অন্য প্লাটফর্মে সার্চ দেওয়ার কারণেও ঘটতে পারে এমন ঘটনা।

এ জন্য কোনো অ্যাপকে পারমিশন দেওয়ার সময় ওই অ্যাপটির জন্য ওই পারমিশন নেওয়া উপযুক্ত কিনা তা জেনে পারমিশন দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রিয় প্রযুক্তি/রিমন