কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রিফাত শরীফ নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা। ছবি: সংগৃহীত

‘চিৎকার করেছি কেউ একটু সাহায্যও করে নাই’

মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০১৯, ১৬:২৫
আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯, ১৬:২৫

(প্রিয়.কম) বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার সময় তার স্ত্রীর আয়েশা আক্তারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আয়েশা নিজে চেষ্টা করেছেন স্বামীকে বাঁচাতে এবং চিৎকার করে অন্যদের সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।

২৬ জুন, বুধবার ওই হামলার ভিডিওতে দেখা যায়, কলেজের মূল ফটকের কাছে কয়েকজন যুবক রিফাতের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে উপর্যুপরি হামলা চালাচ্ছে। এ সময় আয়েশা আক্তার একাই দুর্বৃত্তদের হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন।

সেই ‘বিভীষিকাময়’ অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী (রিফাত) আমাকে কলেজ থেকে নিয়ে ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। আমি অস্ত্রের মুখে পড়েও অনেক বাঁচানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাঁচাতে পারি নাই। আমার আশেপাশে অনেক মানুষ ছিল। আমি চিৎকার করছি, সবাইকে বলছি - ওরে একটু বাঁচান। কিন্তু কেউ এসে আমারে একটু সাহায্যও করে নাই।’

হত্যাকারী সম্পর্কে আয়েশা বলেন, ‘আমাকে হুমকি দিত - কথা না বললে, বলতো মাইরে ফালাবে। তার সাথে কথা বলতে হইবে, ঘুরতে যাতি হইবে। নাইলে বলতো তোমার ভাইরে মাইরে ফালাবো। তোমার বাপেরে কোপাবো।’

আয়েশার পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত রিফাতের সঙ্গে আয়েশার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তা দুই পরিবারই জানত। পরবর্তী সময়ে আয়েশার পরিবার রিফাতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে দুইজনের বিয়ের ব্যবস্থা করে। গেল দুই মাস আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। তবে বিয়ের পরও আয়েশার ওপর হয়রানি বন্ধ হয়নি। তাকে সামনা-সামনি বা ফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে রিফাতকে হত্যাকারী ওই যুবক।

এই ব্যাপারে আয়েশা বলেন, ‘আগে থেকেই সবাই জানে যে সে (হত্যাকারী) মানুষ কোপাইতো... ওরে সবাই ভয় পাইতো। আমিও ওই ভয়েতে পুলিশের কাছে যাই নাই।’

গতকাল হামলাকারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে রিফাতের ওপর আক্রমণ করে। হামলাকারীদের মধ্যে থেকে তিনজনকে চিনতে পারেন আয়েশা আক্তার। পরে পুলিশের কাছে তিনি ওই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাদেরসহ বাকি আর যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের শিগগিরই গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে বলে পুলিশ তাকে আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান আয়েশা।

আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। এদের সবার যেন ফাঁসি হয়। দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার যেন নিশ্চিত হয়।’

এদিকে এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। বাকিদের ধরতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রিয় সংবাদ/রুহুল