কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বাঁশের বেড়াতে গৃহবন্দী ভুক্তভোগী পরিবার। ছবি: সংগৃহীত

বাঁশের বেড়ার সীমানায় গৃহবন্দী পরিবার, নীরব প্রশাসন

মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০১৯, ১৫:৫৩
আপডেট: ২৮ মে ২০১৯, ১৫:৫৩

(প্রিয়.কম) বালিয়াকান্দি উপজেলার একটি গ্রামে গৃহপালিত পশু জমিতে থাকা ফসল নষ্ট করে—এ অভিযোগে একটি পরিবারকে গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বসতবাড়ির প্রবেশপথে বাঁশের বেড়া দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে পরিবারটিকে। এক সপ্তাহ ধরে এভাবে গৃহবন্দী হয়ে জীবনযাপন করলেও এগিয়ে আসেননি কোনো জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কেউ। বাধ্য হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারটি।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের বাহিরচর গ্রামে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে উপজেলাটির ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কারো বাড়ি গিয়ে সমস্যা সমাধান করা তার দায়িত্ব নয় বলে জানান। অবশ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

বাঁশের বেড়ায় গৃহবন্দী হয়ে পড়া পরিবারপ্রধান উপেন বিশ্বাসের ছেলে কালীপদ বিশ্বাস জানান, বাহিরচর গ্রামের সুবল ঘোষের ছেলে খোকন ঘোষ (৪০), দ্বিজেন ঘোষ (৪৫), দ্বিজেন ঘোষের ছেলে দেবাশীষ ঘোষ (২৫), বীরেন ঘোষের ছেলে পারি ঘোষসহ (২০) লোকজন গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে এসে বসতবাড়ির সামনে ও প্রবেশপথে বাঁশ দিয়ে আটকে দেন। এতে তাদের (কালীপদ) সবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

অভিযোগ করে কালীপদ বিশ্বাস বলেন, ‘বাড়ি থেকে বের হতে পারে না কেউ। পরিবারের ছয় সদস্যের মধ্যে দুজন স্কুলে পড়ে। তারাও বের হতে পারছে না। তাদের জায়গা দিয়ে যেন না যাই তার জন্য হুমকি দিয়েছে। এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বলেন, ‘বাঁশের বেড়া দিয়ে কালীপদ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যদের গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। কাজটি খুবই অন্যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে সুবিচার প্রত্যাশা করছি।’

বাঁশের বেড়া দেওয়ার বিষয়ে দেবাশীষ ঘোষ বলেন, ‘জমিতে নানাভাবে অত্যাচার করছিল কালীপদ বিশ্বাসের গরু ও ছাগল। তাদেরকে নিষেধ করা সত্ত্বেও ফসলসহ কিছুই রক্ষা করতে পারছিলাম না। এ কারণে আমাদের জমির সীমানায় বাঁশের বেড়া দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নায়েব আলী শেখ প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আমার কাছে না এলে আমি কী করব? আমার কাছে তো আসতে হবে।’ 

‘তারা আপনার কাছে আসবে কী করে? তাদের তো গৃহবন্দী করা রাখা হয়েছে। তাছাড়া আপনি তো জনপ্রতিনিধি। বিষয়টি তো আপনি জানেন। তাহলে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না?’—এমন প্রশ্নের জবাবে নায়েব আলী শেখ বলেন, ‘এটা আমার দায়িত্ব না। আমি তো বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমস্যা সমাধান করব না।’

বালিয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নায়েব আলী শেখের কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা না পেয়ে ফোন করা হয় বালিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজাকে। বিষয়টি তাকে জানালে তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

প্রিয় সংবাদ/আজাদ চৌধুরী